শিল্প সংস্কৃতির আদর্শ ধর্ম ইসলাম
া মিযানুর রহমান জামীল
আদর্শ সংস্কৃতির জন্য প্রয়োজন আদর্শ জীবনের মাপকাঠি। ইসলাম হলো সঠিক জীবন বিধান ও পরিশুদ্ধ মাপকাঠির ধর্ম। ইসলাম দিয়েছে মানুষকে সুন্দর সুসমাম-িত জীবন ব্যবস্থার গ্যারান্টি। আর যে শান্তির ধর্ম ইসলাম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরে যায়। দীনের বিভিন্ন বিধানকে অবগ্যা করার বিষফল সরূপ এমনটি হয়ে থাকে। অন্য দিকে মুক্ত মনে কেউ যদি নিজের মত প্রকাশ করতে গিয়ে ধর্মের বিরুদ্ধে কোনো ধরণের বিদ্ধেষ ছড়ায় বা ধর্মের উপর কোনো ধরণের আপত্তি কিংবা অভিযোগের আঙ্গুল দাঁড় করায় তবে সেও আল্লাহর রহমতের দৃষ্টি থেকে ছিটতে পড়ে। আল্লাহ নিজেই বলেছেন ‘তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।’
মানব জীবনে সংস্কৃতি হলো একটা গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। প্রত্যেক জিনিসের একটা সীমা-রেখা বা ফর্মুলা থাকে। সীমা-রেখা এবং ফর্মুলার মধ্যে থাকে ভালো-খারাপ তথা ইতিবাচক ও নেতিবাচকের প্রভাব। সুতরাং যারা দেশীয় সংস্কৃতির নামে বিজাতীয় সংস্কৃতি গ্রহণ করছে তারা আদর্শ সংস্কৃতির ভেতরের মানদ-ে থেকে সম্পূর্ণ বাদ পড়ে যায়। আল্লাহ সময় দেন বান্দা সংশোধন হয়ে পূণরায় ফিরে আসে কি না? এ ক্ষেত্রে কেউ যদি সীমালঙ্গন করে তবে তার জন্য আল্লাহর আদালতে কড়ায়-গ-ায় জবাবদিহী করা লাগবে।
পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশের সংস্কৃতি দ্বারা মানব জীবনে কোনো ইতিবাচক বিকাশ ঘটে না, ঘটে ধর্ষণ আর একে অন্যকে চুষে খাওয়ার প্রতিযোগিতা। উন্নয়নশীল দেশগুলোর দিকে তাকালে পরিলক্ষিত হয় তাদের সংস্কৃতির বিকাশ এবং তার অলি-গলি। বিজাতিরা যেভাবে নিজস্ব কৃষ্টি-কালচার পালনে ব্রতী হয়, আমরা নিজেরাই পরবাসী হয়ে তাদের চেয়ে বেশি পালন করছি ভীন দেশীয় কালচার। আর এ সাংস্কৃতিক দিক থেকে কেউ যদি আল্লাহর অবাধ্য হয় তবে তাঁর আজাবও কাউকে ছাড়ে না। কেউ প্রকাশ্যে বা গোপনে আল্লাহর নাফরমানী করলে আল্লাহ তা দেখেন। সাময়িকভাবে এ পাপ থেকে বান্দার ফিরে আসার কোনো অবকাশ থাকলে তাও আল্লাহ দেখেন। কারণ পবিত্র কোরানের সূরা হুজুরাতের ১৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে ‘আল্লাহ আকাশ ম-লী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে অবগত আছেন। তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন’। ইসলাম ধর্ম হলো আদর্শ সংস্কৃতির প্রতীক। ইসলাম ধর্মে যে পরিমাণ সংস্কৃতি পরিচর্যা হয় অন্য ধর্মে তা হয় না। তবুও মুসলমান স্বীয় সংস্কৃতি থেকে গাফেল হয়ে অগ্যতার পরিচয় দিয়ে অন্য সংস্কৃতেিক আপন করে নেয়, যা আপত্তিকর একটা বিষয়।
এ জন্য ধর্মীয় কৃষ্টি-কালচারকে আদর্শের মাপকাঠি এবং জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করা চাই। চাই তা পহেলা বৈশাখ বা যে কোনো অনুষঙ্গের ক্ষেত্রে হয়ে থাকুক না কেন। কিছু না জেনে শুধু ইসলামে বিনোদন নেই বলে গলা ফাটালে অন্য কালচার সঠিক হয়ে যায় না; বরং ইসলাম কিছু সীমারেখা নির্ধারণ করে দিয়েছে যাতে সিমালঙ্গন না হয়ে যায়। জীবনের ছন্দে আনন্দে নিজের ভেতরের চিন্তা ও বৃদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে ধর্মের সঠিক জ্ঞান রাখে এমন ব্যাক্তিদের স্মরণাপন্ন হওয়া বাঞ্ছনীয়। দেশ ধর্ম জাতি দল মত নির্বিশেষে সবার মধ্যে পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক। মানব জীবনের সৌন্দর্যম-িত অনুষদ ও মার্জিত সংস্কৃতির জীবন্ত অধ্যায় ধর্মীয় কৃষ্টি-কালচারের সুনির্মল ছোঁয়ায় হয়ে উঠুক চিরসজীব ও প্রাণবন্ত। এটাই প্রত্যাশা করি।
সম্পাদক, কলমসৈনিক