যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে ৩ বাংলাদেশিসহ ভারত উপমহাদেশের ২৭ জন নির্বাচিত
বিশ্বজিৎ দত্ত : যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৩ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতসহ মোট ২৭ জন ভারত উপমাহদেশ থেকে জিতেছেন। এরমধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূত জয়ী হয়েছেন ১২ ও পাকিস্তানি ১২ জন। তবে এই ৩ দেশের বংশোদ্ভূতদের মধ্যে নারী পার্লামেন্টেরিয়ান বেশি জয়ী হয়েছেন পাকিস্তান থেকে। আবার ৩ দেশের নির্বাচিতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জয়ী হয়েছেন লেবার পার্টি থেকে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নির্বাচিত ৩ পার্লামেন্টেরিয়ান হলেন, টিউলিপ সিদ্দিক, রুশনারা আলী ও রূপা হক।
বঙ্গবন্ধুর নাতী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি, টিউলিপ প্রার্থী হন লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে। ২০১৫ সালে নিজের প্রথম নির্বাচনে রক্ষণশীলদের শক্তিশালী প্রার্থীকে ১ হাজার ১৩৮ ভোটে হারিয়েছিলেন টিউলিপ। পরে তিনি বিরোধী দলনেতা জেরমি করবিনের ছায়া মন্ত্রিসভারও সদস্য হয়েছিলেন। টিউলিপ গতবার পেয়েছিলেন ২৩ হাজার ৯৭৭ ভোট; তার প্রতিদ্বন্দ্বী রক্ষণশীল দলের প্রার্থী পান ২২ হাজার ৮৩৯ ভোট।
শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকের মেয়ে টিউলিপ এবার ভোট বাড়িয়ে পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৪৬৪টি; অন্যদিকে তার প্রতিদ্ব্ন্দ্বীর ভোট কমে হয়েছে ১৮ হাজার ৯০৪টি।
জয়ের পর টিউলিপ বলেন, এই জয়ের পর ব্রেক্সিট নিয়ে দর কষাকষির দিকেও নজর রাখবো। টিউলিপ লন্ডনের মিচামে জন্মগ্রহণ করেন। টিউলিপের শৈশব কেটেছে বাংলাদেশ, ভারত ও সিঙ্গাপুরে। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিক্স, পলিসি ও গভর্মেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে।
লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে প্রার্থী হয়ে গতবার মাত্র ২৭৪ ভোটে জেতা টিউলিপের মতোই প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য হয়েছিলেন কেমব্রিজের ডিগ্রিধারী রূপা। দুই বছরের ব্যবধানে এবার ১৩ হাজার ভোটে জিতেছেন রূপা। ১৯৭২ সালে ইলিংয়ে জন্ম নেওয়া রূপা হক ১৯৯১ সালে লেবার পার্টির সদস্য হন।
তিনি কেমব্রিজে পড়েছেন রাজনীতি, সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন বিষয়ে। কিংস্টন ইউনিভার্সিটিতে পড়িয়েছেন সমাজ বিজ্ঞান, অপরাধ বিজ্ঞান, গণমাধ্যম ও সংস্কৃতি অধ্যয়নের মতো বিষয়। পার্লামেন্ট সদস্য হওয়ার আগে তিনি ডেপুটি মেয়র হিসাবে স্থানীয় কাউন্সিলেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
রুশনারা আলীও জিতেছেন বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনাল গ্রিন ও বো আসন থেকে; এটি তার তৃতীয় জয়।
সিলেটের বিশ্বনাথে ১৯৭৫ সালে জন্ম নেওয়া রুশনারা মাত্র সাত বছর বয়সে বাবা-মার সঙ্গে লন্ডনে পাড়ি জমান। দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে ডিগ্রিধারী রুশনারা পরামর্শক সংস্থা ইয়ং ফাউন্ডেশনের সহযোগী পরিচালক।
ব্রিটেনের তরুণ রাজনীতিবিদদের মধ্যে প্রভাবশালী রুশনারা আলী অক্সফোর্ডে লেখাপড়া করেছেন ফিলসফি, পলিটিক্স ও ইকোনমিক্স (পিপিই) বিষয়ে। লেবার পার্টির ছায়া সরকারে শিক্ষা ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এই নির্বাচনে মোট ১৪ জন বাঙালি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন; এর মধ্যে আটজনই লেবার পার্টির। বাকিদের চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী, লিবারেল ডেমোক্রেট ও ফ্রেন্ডস পার্টির হয়ে লড়েন একজন করে।