তরিকুল ইসলাম সুমন : দেশের প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটার নৌপথের নাব্য সংরক্ষণে কাজ করছে আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্র্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে সরকারের এ কর্মযজ্ঞ পুরোপুরি সফল হচ্ছে না। প্রায় ৪ বছর ধরে জনবল সংগ্রহ প্রক্রিয়া আটকে আছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সত্তরের দশকে সংগ্রহ করা ৭টি ড্রেজারের প্রতিটিতে ২৬ জন করে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব ড্রেজারের অবস্থা খুব একটা ভালো না হওয়ায় ২০০৯-২০১৪ সালের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর বহরে আরো ১৪টি ড্রেজার যুক্ত করা হয়। তারপরেও মিলেনি জনবল। জনবল সংগ্রহের বিষয়টি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। দ্রুত জনবল নিয়োগের এমন আশা করে আরো ২০টি ড্রেজার সংগ্রহ প্রক্রিয়া শুরু করে এই সংস্থা। ইতোমধ্যে ১০ ড্রেজার তৈরির জন্য কাজ করছে দুটি প্রতিষ্ঠান। বাকি ১০টি সংগ্রহের জন্যও দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এসব মেশিনারিজ পরিচালনার জন্য কাজ শেষের ৬ মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার নিয়ম থাকলেও দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনুমোদন পাচ্ছে না। ফলে নানা রকমের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ড্রেজিং বিভাগকে। এক জায়গার লোক অন্য জায়গায় দিয়ে ড্রেজার পরিচালনা করা হচ্ছে। নতুন পুরাতন মিলে ২১টি ড্রেজার সব সময় চালু রাখাও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ড্রেজার তাদের কার্যকারিতা হারাচ্ছে। পাশাপাশি ড্রেজিংয়ের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জনে সমস্যা হচ্ছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট অধিশাখা থেকে জানা গেছে, গতবছরের ৪ ডিসেম্বর বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজারসহ অন্যান্য জলযান পরিচালনার জন্য ৩১২টি পদ অস্থায়ীভাবে রাজস্ব খাতে সৃজনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এটি এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে সচিব কমিটিতে অনুমাদন পেতে হবে তাহলেই বিআইডব্লিউটিএ তাদের প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে।
বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর এম মোজাম্মেল হক এই প্রতিবেদককে জানান, দেশের নৌপথ সচল রাখার জন্য যেমন ড্রেজার প্রয়োজন, তেমনি ড্রেজার পরিচালনার জন্য জনবলও প্রয়োজন। আমরা ৩১২টি পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পেয়েছি। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। গত ২৫মে অর্থ মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত বেশকিছু তথ্য চেয়েছে আমাদের কাছে। আমরা তথ্যগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আশা করছি আগামী দু-এক মাসের মধ্যেই অর্থ মন্ত্রণালয় এটি অনুমোদন দিবে। তারপরে বিষয়টি সচিব কমিটিতে তোলা হবে। এর পরেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ