নুর উদ্দিন, ছাতক (সুনামগঞ্জ) : সুনামগঞ্জ হাওর পাড়ের কৃষক পরিবারের কাছে অর্থ লগ্নিকারী এনজিওগুলো কিস্তি আদায় না করার সরকারের নির্দেশনাও মানছে না। এরা সপ্তাহের নির্ধারিত দিনে গিয়ে ঠিকই ফসলহারা কৃষকদের দ্বারে দ্বারে হাজির হচ্ছে কিস্তি আদায়ের জন্য। কিস্তি না দিলে পরের বছর ঋণ পাবে না, এ ধরনের নানা ভয়ভীতিও দেখাচ্ছে তারা। কোন কোন এনজিও কর্মী সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে কিস্তি আদায় করে ফিরছে। ছাতক উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে জানা গেছে গ্রামীণ ব্যাংক এক সপ্তাহের জন্যও কিস্তি আদায় বন্ধ করেনি।
তাহিরপুরের শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জানালেন, তার ওয়ার্ডের দুটি ঋণ গ্রুপের কাছ থেকে গত রোববার তার সামনেই ব্র্যাক ও উদ্দীপনের মাঠ কর্মীরা কিস্তি আদায় করেছে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের ব্রজনাথপুরের মিনা রানী বিশ্বাস ও তার জা মিলে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। তাদের আড়াই হাল জমি পানিতে ডুবেছে। এক ছটাক ধানও ঘরে তোলা হয়নি। তারা হস্তশিল্পের কিছু কাজ করায় কোনভাবে জীবিকা চলছে। কিন্তু কিস্তি আদায়ের দিন ঠিকই গ্রামীণ ব্যাংকের মাঠ কর্মীরা এসে বসে থাকে। ছাতকের হলদিউরা গ্রামের লেচু বেগম জানান, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। ঘরে খাবার থাকুক বা না থাকুক কিস্তি দেবার দিন টাকা ব্যবস্থা করে রাখেন। না হয় গ্রামীণ ব্যাংকের মাঠকর্মী এসে বসে থাকবে। জামালগঞ্জের দক্ষিণ কামলাবাজের পদক্ষেপ’র ঋণ গ্রহিতা কৃষাণী মমতা বেগম বললেন, ফসল গেছে মাইর, আমি বলছিলাম আমার মাসে এক হাজার টেকার (টাকার) ডিপিএস আছে, ১৩ মাসে ১৩ হাজার টেকা জমা হইছে, এই টেকাগুলো দিলে আপাতত চলতে পারমু (পারবো), দুই জনরে লইয়া (নিয়ে) গিয়া অনুরোধ করছি। তারা টেকা দিলো না। এক সপ্তাহের জন্যও ঋণের কিস্তি বাকী মানে না। কেউ যদি কিস্তি দিতে না পারে সন্ধ্যা পর্যন্ত বইয়া (বসে থেকে) কিস্তি লইয়া (নিয়ে) যায়।