আসন বণ্টনে জোটের শরিকদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করবে বিএনপি
কিরণ সেখ : বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কে কোথায় নির্বাচন করতে চায় এবং সেসব আসনে তাদের কী অবস্থা এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া জোটের শরিক দলের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন তথ্য জানা হচ্ছে। কয়েকটি আসনে জোট প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
জোটের কাউকে ডেকে অথবা কেউ সাক্ষাৎ করতে গেলে খালেদা জিয়া এসব নেতাদের সঙ্গে নির্বাচন ও মনোনয়নের বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। শত প্রতিকূল অবস্থায়ও গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে শরিক দলগুলো অংশ নেয়নি। ফলে শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টন বিষয়ে তাদেরকে সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করবে বিএনপি।
এর আগে বিএনপি জোটের শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করেছে। সেক্ষেত্রে ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে জামায়াতকে ৩১, বিজেপিকে ৭ এবং ইসলামী ঐক্যজোটকে ৬ আসনে ছাড় দেয়। আর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জামায়াতকে ৩৫টি, বিজেপিকে ২, ইসলামী ঐক্যজোটকে ২ এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীকে ২টিসহ শরিকদের মোট ৪১টি আসন ছেড়ে দেয়।
জোটের এক শীর্ষ নেতা জানান, সাম্প্রতিক চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে কাজী নাজমুল হোসেন তাপসকে ডেকে খালেদা জিয়া তার মনোনয়ন নিশ্চিত করেন। তাপস ওই আসনের সাবেক এমপি সদ্যপ্রয়াত কাজী আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
সূত্র জানায়, জামায়াত ছাড়া জোটের অন্য শরিকেদের মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমেদ বীরবিক্রম চট্টগ্রাম ১৩, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থর ভোলা ০১ আসনে তাদের মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত। এছাড়া জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নির্বাহী সভাপতি মুফতী মুহম্মদ ওয়াক্কাস যশোর ৫ থেকে ২০০১ সালে জোটের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
অপরদিকে নীলফামারী-১ আসনে মরহুম মশিউর রহমান যাদু মিয়ার নাতি বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (বাংলাদেশ ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি। বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক চট্টগ্রাম ৪, জাতীয় পার্টি (জাফর) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. টিআইএম ফজলে রাব্বি চৌধুরী গাইবান্ধা ০৩, মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার পিরোজপুর ০১, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) সভাপতি এএইচএম কামরুজ্জামান খান কিশোরগঞ্জ ০৫, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা পাবনা ০২, ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ নড়াইল ০২, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ কুমিল্লা ০৭, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান পিরোজপুর ০২, এসব আসনগুলোতে জোট নেতাদের আসন মোটামুটি নিশ্চিত বলে জানা গেছে।
এছাড়া লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম লক্ষীপুর ০১, ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি ময়মনসিংহ ০৮, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া নরসিংদী ০৩, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান পাবনা ০১ এই আসনগুলোকেও বিবেচনায় নিতে পারে জোট। অপরদিকে জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান ২০০৮ সালের নির্বাচনে দিনাজপুর ০৩ আসন থেকে জোটের প্রার্থী ছিলেন। তবে এবার তার কন্যা ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানকেও প্রার্থী করা হতে পারে।
জানতে চাইলে জেবেল রহমান গানি বলেন, জোট নেত্রী যাকে যোগ্য এবং যিনি আসন ঘরে আনতে সক্ষম তাকেই মনোনয়ন দিবেন। আর আমরা দলের স্বার্থে তার জন্য কাজ করবো। এছাড়া মনোনয়নের ক্ষেত্রে অবশ্যই নেতাদের অবস্থান ও জনপ্রিয়তা দেখা হবে। তবে তিনি (খালেদা জিয়া) আমাকে কাজ করে যেতে বলেছেন। এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, সবুজ সংকেত বলে কিছু নাই। কারণ সহায়ক সরকার ছাড়া জোট আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। তবে আমার বিষয়টি ম্যাডামের নলেজে আছে। তিনি (খালেদা জিয়া) আমাকে কাজ করতে ও গণসংযোগ করতে বলেছেন। আমি সেটা করছি। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু