ট্রাম্প-কোমির বিষয়ে নিশ্চুপ ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল সেশনস
মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে
গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস কোমিকে পদচ্যুত ও রাশিয়া বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনসের কী কথপোকথন হয়েছে, তা তিনি জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের কাছে সাক্ষ্যদানকালে গোপনীয়তার রক্ষার্থে সেশনস তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। তবে যথাযথ কোন নীতিমালা বা আইনের ভিত্তিতে নিশ্চুপ থেকেছেন, সেটা অবশ্য মনে করতে পারেননি। মোট কথা, অ্যাটর্নি জেনারেল সেশনস তার পদক্ষেপ ও চারিত্রিক অখ-তার প্রশ্নে যথেষ্ট অদম্য ও আগ্রাসী ছিলেন। তারপরও ট্রাম্প প্রশাসনকে নিয়ে চলমান বিতর্ক এবং ডেমোক্রেট দলীয়রা তার ‘অবস্ট্রাক্টিং’ বা প্রতিরোধ ও ‘স্টোনওয়ালিং’ বা এড়িয়ে চলার যে অভিযোগ তুলেছে, সেক্ষেত্রে যৌক্তিকতা প্রদর্শনে কোনো প্রকার আইন বা নীতিমালা চিহ্নিত করতে পারেননি। শুধুই বলেছেন, ‘আই এম নট স্টোনওয়ালিং’, অর্থাৎ আমি এড়িয়ে যাচ্ছি না, বরং ‘আই এম ফলোয়িং দ্য হিস্টোরিক পলিসিস অব দ্য ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস’, অর্থাৎ আমি কেবল বিচার বিভাগের ঐতিহাসিক নীতিমালাকেই অনুসরণ করছি।
তথাপি ওই সাক্ষ্যদানের শুরুতে সেশনস শান্ত মেজাজে থাকলেও ‘কোনো প্রকার ভুল করেননি’ তেমনটাই অদম্য ও আগ্রাসীভাবে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বলেছেন, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে তার যোগসাজস ছিল বলে যে গুঞ্জন রয়েছে, তা ‘ডিটেস্টাবল লাই’, অর্থাৎ বিস্বাদপূর্ণ মিথ্যাচার। এছাড়া গত সপ্তাহে কোমির দেওয়া রহস্যপূর্ণ ভাষ্যানুযায়ী সেশনস নিজেকে ‘রাশিয়া বিষয়ক তদন্ত’ থেকে নিষ্কলুষ রাখবেন, তাতে সেশনস অনেকটাই প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। বলেন, ‘দেয়ার আর নান’, অর্থাৎ সেখানে কিছুই নেই। পাশাপাশি বলেন, ‘দিস ইজ এ সিক্রেট ইনুয়েনডু বিয়িং লিকড্ আউট দেয়ার অ্যাবাউট মি, অ্যান্ড আই ডু নট অ্যাপ্রিশিয়েট দ্যাট’, অর্থাৎ সেটা আমার বিষয়ে ফাঁস হওয়া বক্রোক্তি, যা আমার অপছন্দ।
তারপরও ট্রাম্প যেখানে কোমির সাক্ষ্যদানকে পুরোপুরি মিথ্যাচার আখ্যায়িত করেছেন, সে সকল বিষয়ে সেশনস দ্বিমত করেননি। কোমি সিনেট গোয়েন্দা কমিটির কাছে সাক্ষ্যদানকালে এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠককালে সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের বিরুদ্ধে এফবিআই তদন্ত বন্ধ করতে বলেছেন বলে অভিযোগ করেন। সেশনস নিশ্চিত করেছেন যে, ট্রাম্পের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার জন্য কোমিকে সেদিন একা ছেড়ে চলে গেছেন। কোমি সাক্ষ্য দিয়েছেন, সেশনস কিছু একটা আঁচ করে রুমে ‘লিঙ্গার্ড’, অর্থাৎ সময়ক্ষেপণ করেছেন; এক্ষেত্রে সেশনস বলেছেন, রুমে তিনিই শেষ ব্যক্তি ছিলেন, তবে কেন ছিলেন মনে করতে পারেননি। সেশনস স্বীকার করেছেন, পরদিন কোমি তাকে ট্রাম্পের সঙ্গে কথপোকথনের অস্বস্তিটি প্রকাশ করেছেন। এতে নিজের কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি বলে জানান। অবশ্য এই সাক্ষ্য প্রদানকালে অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস নিউ মেক্সিকো রাজ্যের ডেমোক্রেট দলীয় সিনেটর মার্টিন হেনরিক কর্তৃক তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হন, যেখানে সত্য প্রকাশে শপথ নেওয়া সত্ত্বেও সেশনস প্রকৃত সত্য উন্মোচনে নিশ্চুপ ছিলেন।
ই-মেইল: নঁশযধৎর.ঃড়ৎড়হঃড়@মসধরষ.পড়স