এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রাধান্য পাবে নির্বাচন প্রস্তুতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন
হুমায়ুন কবির খোকন : চারদিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন নিয়ে প্রস্তুতি চলছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে। ২৫ জুলাই থেকে তিনদিনব্যাপী সম্মেলন শুরু হচ্ছে। এবারের সম্মেলনে প্রাধান্য পাবে আগামী নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনের প্রস্তুতি ও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, চারদিনের সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ৩৯টি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা, উপমন্ত্রী মাঠ প্রশাসনকে পরামর্শ ও নির্দেশনা দেবেন। আলোচনায় আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে আলোচনা হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা প্রশাসকের দফতর থেকে প্রায় ৩ শতাধিক প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এসেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এসব প্রস্তাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সুপারিশের জন্য পাঠিয়েছে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সেই অনুযায়ী সুপারিশ পাঠিয়েছে। সূত্র জানায়, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকেও এসব বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রস্তাবনা নেওয়া হয়েছে। তারা এসব বিষয়ে মাঠপর্যায়ের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে বাস্তবভিত্তিক সুপারিশমালা পেশ করেছেন। ডিসি সম্মেলনে সরাসরি এসব বিষয়ের উপর আলোচনা শেষে বিষয়ভিত্তিক সমাধানের নির্দেশনা দেওয়া হবে।
একজন সিনিয়র সচিব জানান, আগামী নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে মাঠপ্রশাসকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। ঈদের পরই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হবে। সুষ্ঠুভাবে যাতে রাজনৈতিক দলের প্রচারণা চালাতে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, জনগণের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রাধান্য পাচ্ছে ভূমি ব্যবস্থাপনার উন্নতির বিষয়টি। এ বিষয়কে সম্মেলনের আলোচ্যসূচির এক নম্বরে রাখা হয়েছে।
ভূমি ব্যবস্থাপনার পরই ডিসি সম্মেলনে প্রাধান্য পাবে জঙ্গি দমনসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি। জঙ্গিদমনসহ জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে মাঠপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সম্মেলন থেকে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের জঙ্গিদের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একাধিক চিঠি দিয়ে মাঠপ্রশাসনকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার জন্য আগেই বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, জেলা প্রশাসক সম্মেলন রুটিন ওয়ার্ক। তাদের প্রস্তাব ও সুপারিশ অনুযায়ী এ সম্মেলনে আলোচনা হবে।
সম্মেলনে আরও যে বিষয়গুলো আলোচনায় প্রাধান্য পাবে। এর মধ্যে- স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম জোরদার করা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম জোরদার করা, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন ও দারিদ্র্যবিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স, শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণরোধ, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয় সাধন করা। ২৫ জুলাই সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ে এ সম্মেলন উদ্বোধন করবেন। ৩৯টি মন্ত্রণালয় সম্মেলনে পর্যায়ক্রমে অংশ নেবে।