জিহবার রোজা
মো. আবু তালহা তারীফ : রমজান মাস আল্লাহ তায়ালার এক নিয়ামত পূর্ণ মাস। এই মাসে রোজা রাখা ফরজ। এই মাসসহ প্রত্যেক মাসে আমাদের জিহবাকে হেফাজত করতে হবে। কেননা জিহবা হল মানবজাতীর শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ। গুরুত্বপূর্ন বিধায় সর্ব সময় তা রসালো থাকে। এই জিহবা দিয়ে সে তার প্রভুর গুণগান করে, প্রিয় নবী (সা:) এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করে। পবিত্র কোরআন ও হাদিস সে এই জিহবা দিয়ে চর্চা করে। ইসলামের দিকে আহবান এই জিহবা দিয়ে করে থাকে। মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নেয়ামত জিহবা দিয়ে ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করে। সর্ব সময় জিহবাকে ভয় করা প্রয়োজন। হজরত সুফিয়ান ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন “আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসুল! (সা:) আমার জন্য সবচেয়ে ভয় করার বস্তু কি? রাসুল (সা:) নিজ জিহবাকে বের করে তা হাত দিয়ে ধরে বললেন,“এটি”।
শরীরের সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ জিহবাকে বলে তুমি যদি ঠিক থাক তাহলে আমি ঠিক থাকব, আর তুমি যদি ঠিক না থাক তাহলে আমি ঠিক থাকতে পারব না। হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) এর এক বর্ননায় এসেছে তিনি বলেন, মানুষ যখন সকালে ঘুম থেকে উঠে তখন সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ জিহবার দিকে ফিরে বলে যদি তুমি ঠিক থাক তাহলে আমরা ঠিক থাকতে পারব আর তুমি যদি গোলমাল কর আমরা গোলমাল করব”। (মিশকাত)
জিহবার সাহায্যে মানুষ তার মনের ভাক অন্যের নিকট প্রকাশ করতে পারে। জিহবার দ্বারা কথা বলা যায়। জিহবা দ্বারা কথা বলার কারনে পরস্পরের মধ্যে বন্ধুত্ব ও শত্রুতা সৃষ্টি হয়। জিহবার মাধ্যমে মানুষ বিভিন্ন রকম অপরাধ করে। জিহবা দিয়ে কথার মাধ্যমে মিথ্যা, গীবত, চোগলখুরী, রিয়া, কপটতা, ঝগড়া, অপরকে কষ্ট দেয়া, গোপন বিষয়ে জানিয়ে দেয়া, অন্যকে মিথ্যা শিখানো, অপরাধ মুছে ফেলার জন্য মিথ্যা বলা ইত্যাদি অন্যায় ও অপরাধ করে থাকে। জিহবা দ্বারা অতিরিক্ত কথা বলায় অপরাধ মূলক কথা বেশি হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
জিহবা দিয়ে প্রয়োজনের বেশি কথা না বলে মহান প্রভুর গুণগান যিকির, আল্লাহর ভয় অন্তরে পোষণ ও রাসুল (সা:) এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের মাধ্যমে কল্যান পাওয়া যাবে। কেননা মানুষের জিহবা দ্বারা সংঘঠিত সকল কথাই লিপিবদ্ধ করা হয়ে মহান প্রভুর নিকট পৌছানো হয়। মুখ থেকে নির্গত অসভ্য অতিরিক্ত কথার উপর অভিশাপ দেয়া হয়। যা মহান আল্লাহর নিকট দলিল হবে। জিহবাকে সংরক্ষণ করতে হবে। রাসুল (সা:) বলেন, যে ব্যক্তি আমাকে তার জিহবা ও লজ্জাস্থানের জিম্মাদারীর নিশ্চয়তা দিবে, আমি তাকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দিব”। (মিশকাত)