লন্ডনে মহামান্য কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও আড়ম্বরপূর্ণ সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান
যোসেফ গমেজ
১৭ মে, বুধবার লন্ডনের ফরেষ্ট গেইট এ বাংলাদেশ খ্রিস্টান কমিউনিটি ইউকে’র (বিসিসি ইউকে) উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় পূণ্যপিতা পোপ মহোদয়ের প্রতিনিধি মহামান্য কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও সিএসসি এর জাকজমক পূর্ন সম্বোর্ধনা অনুষ্ঠান। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লন্ডন ব্যুরো অফ নিউহ্যাম এর স¤œানিত কাউন্সিলর মি. পল সত্যান্বেষণ, সেন্ট আন্তোনী ক্যাথলিক প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মিসেস এঞ্জেলা ম্যুর, সেন্ট আন্তোনী ক্যাথলিক চার্চের পালপুরহিত ফা. জন যীজাস, ফা. প্যাট্রিক শিমন গোমেজ, বেঙ্গলী খ্রিস্টান মিনিস্ট্রি’র যাজক কাজল সরকার এবং ক্রস সারকেল লি. এর চেয়্যারম্যান মি. জুড মার্ক রোজারিও।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খ্রিস্টান কমিউনিটি ইউকে’র (বিসিসি ইউকে) আহ্বায়ক মি. ফিলিপ গমেজ। এছাড়াও বক্তব্য প্রদান করেন সন্মানিত কাউন্সিলর মি. পল সত্যান্বেষণ, পাস্টর কাজল সরকার, প্রধান শিক্ষিকা মিসেস এঞ্জেলা ম্যুর এবং আরো অনেকে। সর্বশেষে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি এবং অনুষ্ঠানের মধ্যমণি মহামান্য কার্ডিনাল মহোদয়। উনি বক্তব্যের শুরুতে তাঁর কার্ডিনাল জীবনের অভিজ্ঞতা সহভাগিতা করেন এবং সকল প্রবাসী খ্রিস্টান ভাইবোনদের হিংসা বিদ্বেষ ভুলে, স্বার্থপরতা ত্যাগ করে খ্রিস্টিয় আদর্শে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা ও উপদেশ প্রদান করেন। বক্তব্যের পরিশেষে তিনি লন্ডন প্রবাসী ভাইবোনদের অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের পূর্বে প্রবাসী খ্রিস্টভক্তদের উদ্দেশ্যে বাংলায় বিশেষ খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন কার্ডিনাল মহোদয় এবং ফা. প্যাট্রিক শিমোন। খ্রিস্টযাগের পর খ্রিস্টভক্তরা কীর্তন করে শোভাযাত্রার মাধ্যমে কার্ডিনাল মহোদয়কে মূল অনুষ্ঠান কেন্দ্র সেন্ট আন্তোনী ক্যাথলিক প্রাইমারী স্কুল হলে নিয়ে যান। এরপর ছোট্ট সোনামনিরা ফুলের তোরা দিয়ে কার্ডিনাল মহোদয়কে বরণ করেন। কার্ডিনাল মহোদয়ের সন্মানে মানপত্র পাঠ ও প্রদান করেন মিসেস যূঁথিকা কস্তা। লন্ডন ব্যুরো অফ নিউহ্যাম এর সন্মানিত কাউন্সিলর মি. পল সত্যান্বেষণ মহামন্য কার্ডিনালকে তামিল ঐতিহ্যানুযায়ী শাল জড়িয়ে সন্মান প্রদর্শন করেন। বাংলাদেশ খ্রিস্টান কমিউনিটি ইউকে’র (বিসিসি ইউকে) আহ্বায়ক মি. ফিলিপ গমেজ পূজণীয় কার্ডিনালকে ক্রেস্ট প্রদান করেন। প্রবাসী খ্রিস্টভক্তদের সাথে এরপর কার্ডিনাল মহোদয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং পরিশেষে সকলের সাথে নৈশভোজে অংশগ্রহন করেন। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মি. যোসেফ গমেজ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাকে সহায়তা করেন মিসেস রাখী কস্তা। সবশেষে বিসিসি ইউকে’র সাধারন সম্পাদক মি. লেনার্ড রোজারিও ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ইষ্টার সানডে প্রোগ্রামে উপস্থিত সকল খ্রিস্টভক্তদের মুক্ত আলোচনা চলাকালীন অনেকেই একটি সংগঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যক্ত করলে- উপস্থিতিদের প্রস্তাব ও সমর্থনের মাধ্যমে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি এড-হক কমিটি গঠন করা হয়। অতঃপর, এড-হক কমিটির প্রথম মিটিং-এ শ্রদ্ধেয় ফা. আলবার্ট রোজারিও’র উপস্থিতিতে সংগঠনটির নামকরণ করা হয় ‘বাংলাদেশ খ্রিস্টান কমিউনিটি ইউকে (বিসিসি ইউকে)’। অধিকন্তু, সদস্য-সদস্যাদের প্রস্তাব ও সমর্থনে মি. ফিলিপ গমেজকে আহ্বায়ক করে দায়িত্ব বন্টন করা হয়; মি. লেনার্ড রোজারিও (সম্পাদক), মি. লিটন রিবেরু (কোষাধ্যক্ষ), মিসেস সোমা গমেজ (সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা)। এছাড়াও নির্বাহী সদস্যরা হলেন মি. জুড মার্ক রোজারিও, মিসেস পাপিয়া গমেজ, মিসেস ফ্লোরেন্স কোড়াইয়া, মি. ডোনাল্ড রোজারিও, মি. টনি গমেজ, মি. জন গমেজ এবং মিসেস যূঁথিকা কস্তা।
বাংলাদেশ খ্রিস্টান কমিউনিটি ইউকে’র (বিসিসি ইউকে) মূল লক্ষ্য হলো ব্রিটেনে প্রবাসী খ্রিস্টান বাঙ্গলাদেশীদের খ্রিস্টিয় মূল্যবোধে একত্রিত করে বাংলাদেশী ও ব্রিটিশ সংস্কৃতির মধ্যে সমন্বয় ঘটানো এবং ব্রিটিশ মূল্যবোধের সহিত একাতœতা প্রকাশ এবং তা নিষ্ঠার সাথে ধারন ও পালন করা।