বাজেট উচ্চাভিলাষী বাস্তবায়নে দিক-নির্দেশনা নেই : বিশ্বব্যাংক
জাফর আহমদ : প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এ প্রাক্কলন উচ্চাভিলাষী। কিন্তু এসব লক্ষ্য পূরণে কোনো সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই। অনেক লক্ষ্যমাত্রাই আশার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়েছে। বাস্তবতার সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রেই মিল নেই। এমন মন্তব্য করেছে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিস। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে আয়োজিত প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি চিমিও ফান, লিড ইকোনোমিস্ট। এছাড়া বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ শেখ তানজিব ইসলাম, জনসংযোগ কর্মকর্তা মেহরিন এ মাহবুবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি চিমিও ফান বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন খুবই চ্যালেঞ্জ। প্রাক্কলিত বাজেট বাস্তবায়নে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করার ছাড়া দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ বা নীতিগত সংস্কার নেই এই বাজেটে।
ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাজেটে প্রবৃদ্ধি, সীমিত ঘাটতি, বৈদেশিক সহায়তা, রাজস্ব আদায়সহ যেসব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, তা হয়তো অর্জনের আশা করতেই পারি। কিন্ত এটা কিসের ভিত্তিতে হবে সেটা বাজেটে দেখছি না। একইসঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে যে ধরনের আর্থিক খাতসহ অন্যান্য সেক্টরে যেসব সংস্কারের প্রয়োজন ছিল তা দেখছি না। এজন্য এ বাজেটকে সংক্ষিপ্ত আশ্বাসের বাজেট বলছে বিশ্বব্যাংক।
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যয় অনেক বেশি। এর কারণ হলো দুর্নীতি ও টেন্ডারিংয়ে প্রতিযোগিতা অনেক কম। তাই সরকারের উচিত ৮০ শতাংশ ই-টেন্ডারিং করা। এটা করতে পারলে টেন্ডারিংয়ে প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন খরচ কমবে। তবে তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কাঁচামালের বাজার ও ভূমির ভিন্নতার কারণেও ব্যয় বাড়তে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে ৫টি চ্যালেঞ্জ রয়েছে জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরে সুশাসন ও তদারকি বাড়ানো, খেলাপি ঋণের ঝুঁকি কমিয়ে আনা, বিদ্যুতের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। এছাড়া সঞ্চয়পত্রে মাত্রাতিরিক্ত সুদ গুনতে হচ্ছে সরকারকে। এ অবস্থায় সঞ্চয়পত্রের সুদের হার সমন্বয় করতে হবে। মুদ্রা বিনিময় হারকে তার বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে দিতে হবে। একইসঙ্গে চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ