অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি জাতীয় পার্টির
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট থেকে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের সমালোচনা করে এর জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পদত্যাগ দাবি করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। একই সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়েরের কথাও বলেছেন তিনি।
গতকাল জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাপার এমপি জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এই দাবি জানান। জাপার আরেক সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ প্রস্তাবিত বাজেটকে জনগণের সঙ্গে শ্রেষ্ঠ তামাশা বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী আপনার কাছে মাফ চাই, ক্ষমা চাই। আপনার কাছে আর আমরা বাজেট চাই না।
বাজেট সম্পর্কে সমালোচনা করে বাবলু বলেন, ট্যাক্স পেয়ারের দুই হাজার কোটি টাকা উনি ব্যাংকিং খাতের ঘাটতি পূরণে দিচ্ছেন। মানুষের টাকা দিয়ে লুটপাটের টাকা পূরণ করছেন। এটা কোনো নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। এটা অনৈতিক কাজ। উনি নৈতিকতা ও আইনবিরোধী প্রস্তাব কীভাবে করেন?
বাবলু বলেন, উনার (মাল মুহিত) বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল চার্জ আনা উচিত। মুহিতের উদ্দেশে বিরোধী দলের এই সংসদ সদস্য বলেন, আপনি বিদায় নিন। পদত্যাগ করুন। সম্মানের সাথে বিদায় নিন। আপনার অনেক বয়স হয়েছে। আপনাকে সম্মান করি। বিদায় নিয়ে ষোল কোটি মানুষকে মুক্তি দিন।
তিনি বলেন, খেলাপী ঋণ আদায় হলে ভ্যাট বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। বিচিত্র দেশের বিচিত্র মন্ত্রীর বিচিত্র বাজেট মন্তব্য করে অ বাবলু বলেন, আপনি কি উন্নয়নের মহাসড়কে নাকি দুর্যোগের মহাসড়কে আছেন সেটা বিবেচনার বিষয়।
ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানান বাবলু। ফিরোজ রশিদ বলেন, এটা কোনো বাজেটই হয়নি। দয়া করে আমাদের মুক্তি দেন। আমরা আর আপনার কাছে বাজেট চাই না। কি বাজেট আপনে দেবেন? এটা কি ভোটের বাজেট? আগামী বছর তো ভোট। নাকি ভোট নষ্ট করার বাজেট দিয়েছেন। ভোটারদের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করেছেন। ভোটারদের ওপর ভ্যাট ধরেছেন। তারপরও ভোট চান। এদেশের মানুষ এতো পাগল।
ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বসানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক ধরলেন। আবগারি শুল্ক ধরা হয় মদ, গাঁজা, আফিম, পান, বিড়ি, সিগারেটের ওপর। আপনি জনগণের আমানতের টাকা, ন্যায্য টাকা, সেই টাকার ওপর শুল্ক বসালেন।
মন্ত্রীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনারা কেবিনেটে বাজেট অনুমোদন দিয়ে এখানে সমালোচনা করেন। আপনাদের নৈতিক অধিকার কি আছে? স্যালো মেশিনের ওপর ভ্যাট বসাবেন। এ স্যালো মেশিন দিয়ে নৌকা চলে। নৌকা কিন্তু আর চলবে না। নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে।
আয়কর ফর, নিয়ে ফিরোজ রশীদ বলেন, আয়কর ফরম এতো বড়, পূরণ করতে আপনি শেষ হয়ে যাবেন। আপনার বাপ-দাদা যারা মারা গেছেন, তাদের ইতিহাস লিখতে হবে।