সুজন কৈরী : রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরের বিরুলিয়া ব্রিজের পাশ থেকে হাইওয়ে পুলিশের এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদারের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খবর পেয়ে গতকাল বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
রূপনগর থানার ওসি মো. শহীদ আলম জানান, এএসপি মিজানুর রহমান হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর রিজিওনের সাভার সার্কেলে দায়িত্বরত ছিলেন। বুধবার ভোর ৬টায় বাসা থেকে বের হন তিনি। এরপর তার সঙ্গে বাসার লোকজনের যোগাযোগ ছিলো না। পরে সকালের দিকে হাইওয়ে দিয়ে একটা বাস যাওয়ার সময় লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। এরপর পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। লাশের সঙ্গে থাকা দু’টি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়। ফোনের সূত্র ধরেই তার পরিচয় জানা যায়। ওসি জানান, বেড়িবাঁধ-সংলগ্ন সেতুর আগে তার লাশ পড়ে ছিল। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী এএসপি মিজানুর রহমানকে দুর্বৃত্তরা গলায় ঝুটের কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা অন্য কোথাও হত্যার পর বেড়িবাঁধ এলাকায় তার লাশ ফেলে গেছে। আমরা সবগুলো বিষয় সামনে রেখে খতিয়ে দেখছি। তার শরীরে একটি চেক শার্ট ছিল। প্যান্টটি ছিল পুলিশের ইউনিফর্ম। সঙ্গে ব্যাগে তার ব্যক্তিগত গাড়ির চাবিও পাওয়া গেছে। পুলিশ কর্মকর্তা এখানে কিভাবে আসলেন বা কারা তাকে এখানে নিয়ে এসেছে তা জানার চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থল থেকে সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা আলামত সংগ্রহ করেছেন। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি শহীদ আলম আরও বলেন, তার নামে অফিসিয়াল কোনও গাড়ি ইস্যু করা ছিল না। একারণে তিনি ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার নিয়ে অফিসে যেতেন। এছাড়া গণপরিবহণেও অফিসে যাতায়াত করতেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রাইভেট কারটি তার বাড়ির গ্যারেজেই রয়েছে। তার সঙ্গে থাকা ব্যাগের ভেতরে পুলিশের ইউনিফর্মের শার্ট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি অফিসে গিয়ে ইউনিফর্মের শার্ট পােন।
মিজানুরের পরিবারের সদস্যরা জানান, মিজানুর রহমানের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল এলাকার আলিভুখা গ্রামে। উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়কের ৩৮ নম্বর বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকতেন তিনি। ১৯৮৯ সালে উপ-পরিদর্শক হিসেবে পুলিশে যোগদান করা মিজানুর রহমান বছর তিনেক আগে এএসপি হিসেবে পদোন্নতি পান। এর আগে তিনি মানিকগঞ্জের ঘিওর থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দুই সন্তানের জনক। তার বড় মেয়ে সুমাইয়া উত্তরার একটি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ছে। আর ছোট ছেলে মুশফিক প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। মিজানুর রহমানের ভাগ্নে শামীম শেখ বলেন, তারা বুঝতে পারছেন না কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে। তার খালুর সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা ছিল কিনা তা তারা বলতে পারছেন না। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি