আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে আরও বাজেট দেবেন মুহিত অর্থমন্ত্রীর বয়স নিয়ে সমালোচনার কড়া জবাব তোফায়েলের
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশের পর থেকে সংসদে এবং সংসদের বাইরে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনায় সরব রয়েছে। আমানতের উপর আবগারি শুল্ক, সঞ্চয়পত্রের উপর শুল্কসহ বিভিন্ন অসংগতি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিষোদগার অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিরা সংসদে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই প্রস্তাবিত বাজেটকে নির্বাচন বিরোধী বলে অসংগতিগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির সিনিয়র এমপি জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুসহ আরও দুই এমপি বাজেটের তীব্র সমালোচনা করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পদত্যাগ দাবি করেন। বাবলু অর্থমন্ত্রীর বয়স নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেন। জাপার আরেক সিনিয়র এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ অর্থমন্ত্রীকে বয়সের ভারে ন্যূজ বলে বিদায় নেওয়ার আহ্বান জানান। এভাবে গত ১ জুন থেকেই সংসদেই প্রস্তাবিত বাজেট এমপিদের তোপের মুখে পড়ে আসছিলেন মুহিত। কিন্তু গতকাল প্রথমবারের মতো বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জাপার এমপিদের বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়ে অর্থমন্ত্রীর পাশে নিজের এবং সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের আস্থার বিষয়টি জানান দেন। তিনি অর্থমন্ত্রীর পক্ষে মত প্রকাশ করে বলেন, সম্মানিত মানুষকে সম্মান দিতে হয়। অর্থমন্ত্রীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আস্থা আছে। তিনি আরও বাজেট দেবেন।
গতকাল জাতীয় সংসদের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, অর্থমন্ত্রী ১১টি বাজেট দিয়েছেন। উনি বেঁচে থাকলে আরও দেবেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তিনি আরও বাজেট দেবেন। কারণ তার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আস্থা আছে। তোফায়েল বাবলু ও ফিরোজ রশীদের উদ্দেশে তোফায়েল বলেন, বাবলু যে ভাষায় অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন আমি এ ভাষা আশা করিনি। সমালোচনা করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু সমালোচনা হবে গঠনমূলক। তিনি আরও বলেন, যখন বয়স নিয়ে কথা বলেন, আপনাদের নেতা এরশাদের বয়সের কথা চিন্তা করেন না? যার নেতৃত্বে আপনি দল করেন। তার বয়স তো অর্থমন্ত্রীর চেয়ে পাঁচ বছর বেশি। বাবলু কী করে ভুলে গেলেন? বাবলু যদি বলত, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অনেক বয়স হয়েছে, আপনি আগে পদত্যাগ করেন। তাহলে কথাটা খুব ভালো ছিল।’
তোফায়েল বলেন, অর্থমন্ত্রী বাজেট দিয়েছেন। আমরা নিজেরাও অনেকে এ বাজেটের সমালোচনা করেছি। এ বাজেট আমাদের মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত। এটা প্রস্তাব, ফাইনাল নয়। যদি বাজেট নিয়ে কোনো কথা থাকে প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন, বাজেট পেশের পরে যদি কোনো সমস্যা থাকে, জনগণের ওপর যদি করের বোঝা আসে, ব্যাংকের বিষয় নিয়েÑ তিনি সেগুলো দেখবেন।’
সিনিয়র এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী জানেন মানুষ কী চায়? ২৮ তারিখ প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন। সেই দিনই তিনি অর্থমন্ত্রীকে বলবেন এটা করেন ওটা করেন। এমনভাবে অনুমোদিত হবে, বাংলাদেশের মানুষ শুধু প্রশংসা করবে না, বলবে এটা শ্রেষ্ঠ বাজেট। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যদি কোনো সমস্যা থাকে তবে তিনি সেগুলো দেখবেন।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তোফায়েল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না। নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। আপনারা ২০১৪ সালে এই চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু সফল হননি। আগামীতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে আনতে হবে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী