আনোয়ারুল করিম : গৃহকর্মীকে ঠকানো ও ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার জাতিসংঘের বাংলাদেশি কর্মকর্তা হামিদুর রশীদ জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের একজন কর্মকর্তা আমাদেরসময় ডট কমকে এই তথ্য জানান। জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি অ্যানালাইসিস ইউনিটের প্রধান হামিদুর রশীদকে (৫০) মঙ্গলবার সকালে নিউ ইয়র্ক থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিদেশি কর্মী নিয়োগের চুক্তিতে জালিয়াতি, ভিসা জালিয়াতি এবং পরিচয় জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার বিকালে হামিদুরকে ম্যানহাটন ফেডারেল কোর্টে হাজির করা হলে বিচারক জেমস কট শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
হামিদুরের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন রাষ্ট্রনিযুক্ত একজন আইনজীবী। পরে তিনি জানান, হামিদুর অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না। তিনি আরেকজন আইনজীবী নিয়োগ করবেন।
এর আগে ১২ জুন নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসাল জেনারেল শাহেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয় গৃহকর্মীকে নির্যাতন এবং মজুরি চাওয়ায় হত্যার হুমকির অভিযোগে। গ্রেপ্তারের ৩৬ ঘণ্টা পর ৫০ হাজার ডলার বন্ডে জামিনে মুক্তি পান তিনি।
হামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সপ্তাহে ৪২০ ডলার মজুরিতে গৃহকর্মী নিয়োগের চুক্তি করে তার ভিসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে চুক্তিপত্র দাখিল করেন। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে গৃহকর্মী যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছালে হামিদ নতুন একটি চুক্তিতে তার সই নেন, যেখানে সাপ্তাহিক মজুরি ২৯০ ডলার লেখা হয়।
হামিদুর রশীদ ওই গৃহকর্মীর পাসপোর্ট নিয়ে নেন এবং অন্য কোথাও কাজ করলে তাকে প্রথমে কারাগারে ও পরে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে বিভিন্ন সময় হুমকি দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, হামিদুর রশীদ প্রথম দিকে ওই গৃহকর্মীর হাতে কোনো টাকা দেননি। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত কাজের জন্য বাংলাদেশে তার স্বামীকে মাসে ৬০০ ডলারের সমপরিমাণ টাকা পাঠান। ওই বছর অক্টোবরে সরাসরি তার হাতে ৬০০ ডলার দেন।
ইউএনডিপির এই বাংলাদেশি কর্মকর্তা কখনোই তার গৃহকর্মী বা তার স্বামীকে মূল চুক্তি অনুযায়ী সপ্তাহে ৪২০ ডলার করে দেননি বলে অভিযোগে বলা হয়।
এছাড়া গৃহকর্মীকে যথাযথ বেতন দিচ্ছেন বলে জাতিসংঘে প্রমাণ দিতে তার নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুললেও হামিদ ও তার স্ত্রী নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে মামলায় বলা হয়েছে।
গৃহকর্মী ২০১৩ সালেই হামিদের বাসা থেকে চলে যান এবং আর ফেরেননি বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়। সম্পাদনা : মাকসুদা লিপি