অটোর মৃত্যুতে আবারও উত্তেজনা বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র ও উ.কোরিয়ার
পরাগ মাঝি : যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ও রিপাবলিকান নেতা ম্যাককেইন বলেছেন অটো ওয়ার্মবিয়ারকে হত্যা করেছে উত্তর কোরিয়া। সম্প্রতি অটোকে উত্তর কোরিয়া থেকে কোমা অবস্থায় মুক্তি দেওয়ার পর সোমবার তার মৃত্যু হয়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসার পর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, অটোর মাথায় বহু আঘাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার মাথার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন অংশই অকেজো হয়ে গিয়েছিলো।
একটি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় ম্যাককেইন বলেন, ‘ব্যপারটাকে একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবুন। অটো ওয়র্মবিয়ার একজন মার্কিন নাগরিক, যাকে খুন করেছেন উত্তর কোরিয়ার একনায়ক। উত্তর কোরিয়ায় জীবনের শেষ বছরগুলো তাকে কাটাতে হলো দু:স্বপ্নের মধ্য দিয়ে। উত্তর কোরিয়া হলো সেই দেশ, যেখানে ৭০ বছর ধরে নিজ দেশের লোকেরাই বন্দী হয়ে আছে। সেখানে নাগরিকদের জোর করে কাজ করানো হয়, করা হয় নির্মম নির্যাতন এবং খুন।’ তিনি আরও বলেন, উত্তর কোরিয়া তার প্রতিবেশীদের হুমকি দেয়, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে রাখে এবং আমেরিকার মাটিতে আঘাত হানার জন্য প্রতিনিয়তই তারা পারমানবিক অস্ত্র বানিয়ে চলেছে। এখন তারা আমেরিকানদের উপর নৃশংসতা চালাচ্ছে।’
বিবৃতিতে ম্যাককেইন আরও জানান, বর্তমানে উত্তর কোরিয়ায় অন্তত তিনজন মার্কিন বন্দী রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘শত্রুরা নাগরিকদের হত্যা করবে এটা যুক্তরাষ্ট্র কিছুতেই মেনে নেবেনা।’
ম্যাককেইনের মতো উত্তেজিত হয়ে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অটোর মৃত্যুর পরপরই তিনি এক টুইটে বলেন, ‘যে শাসকেরা অটোর মতো নিরীহ মানুষকে নির্মম নির্যাতন করে তাদের প্রতিরোধ করার জন্য আমার প্রশাসনের সংকল্পকে আরও দৃঢ় করে।’
অন্য একটি টুইটে তিনি আরও বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ শিকারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।’
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে উত্তেজনা বিরাজ করেছিলো, চীনের হস্তক্ষেপে তা কমে আসলেও, ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ব্যপারে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার উপর চীনা চাপ কোন কাজে আসেনি।’
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যেও অটোর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তর কোরিয়া বিরোধী মনোভব তীব্র হচ্ছে। ওহাইয়ো অঙ্গরাজ্যের প্রত্যেক সিনেটর অটোর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সিনসিনাতির রিপাবলিকান সিনেটর রব পোর্টম্যান বলেন, ‘এ ধরণের ঘৃণ্য আচরণের জন্য সার্বজনিন নিন্দা জ্ঞাপন করা হোক।’
অটোর মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ তার পরিবারের সদস্যরা। তার মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় এটাই ওয়ার্মবিয়ারের বাবার চাওয়া। এমনকি তারা ওয়ার্মবিয়ারের ময়ণাতদন্ত করতেও রাজি নন।
এদিকে, আটক তিন নাগরিকের মুক্তি চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টম্যান্ট থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে উত্তর কোরিয়ার কাছে। স্টেট ডিপার্টম্যান্টের মুখপাত্র হেথার নট বলেন, ‘অটো ওয়ার্মবিয়ারের অন্যায় কারাদ-ের জন্য আমরা উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করছি। দেশটিতে বন্দী অন্য তিন নাগরিকের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমরা জানতে চাই এবং যতো দ্রুত সম্ভব যেন তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।’ রয়টার্স, ম্যাট্রো, ফরেন পলিসি