(১) ধূপ বা ধূপতি মাটি বা গন্ধের প্রতীক স্বরূপ।ধূপ বা ধূপতির মাধ্যমে, আরতি করে ঈশ্বরের নিকট নাসিকা (নাক) ইন্দ্রিয়ের ভোগ বাসনার প্রতি আকর্ষণ মুক্ত হতে পারি- সেই প্রার্থনা জানাতে হয়।
(২) পঞ্চ প্রদীপ তেজ বা অগ্নির প্রতীক, রূপের প্রতীক।
(৩) জলশঙ্খ অপ্ বা জলের প্রতীক, রসের প্রতীক।জল শঙ্খ দিয়ে আরতি করে জিহ্বা ইন্দ্রিয়ের ভোগ বাসনা থেকে আসক্তি মুক্ত হতে পারি সেই প্রার্থনা জানাতে হয়
(৪) চামর ও পাখা মরুৎ বা বায়ুর প্রতীক, স্পর্শ সুখের প্রতীক।চামর ও পাখা দিয়ে আরতির মাধ্যমে ত্বক ইন্দ্রিয়ের ভোগ হতে আসক্তি মুক্ত হতে পারি- সেই প্রার্থনা জানাতে হয়
(৫) বিভিন্ন প্রকার বাদ্যযন্ত্রের শব্দ বোম্ বা আকাশের প্রতীক।ঘণ্টা, ঢাক, কাসর প্রভৃতি বাজিয়ে আরতি করার মাধ্যমে কর্ণ ইন্দ্রিয়ের ভোগ বাসনা হতে মুক্ত হতে পারি- সে প্রার্থনা জানাতে হয়।
(৬) ত্রিশূল, তরবারি, চক্র প্রভৃতি শক্তির প্রতীক। ভিতর ও বাইরের শত্রু দমনের প্রতীক।তাই ত্রিশূল দিয়ে বা অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে আরতি করার মাধ্যমে- ভেতরের শত্রু থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ভগবানের নিকট আন্তরিক প্রার্থনা জানাতে হবে
(৭) পুষ্প বা ফুল ভক্তি ও আত্মনিবেদনের প্রতীক।তাই পুষ্প পাত্র দিয়ে আরতি নিবেদনের মাধ্যমে শ্রীগুরু ভগবানের নিকট প্রার্থনা জানাতে হবে ‘হে আমার প্রাণের ঠাকুর, আমার জীবনকে যেন ফুলের মত পবিত্র করতে পারি অর্থাৎ সৎ চরিত্রবান হতে পারি।’
এভাবে উল্লিখিত সমস্ত উপচারের আরতির মাধ্যমে- গন্ধ, রূপ, রস, শব্দ, স্পর্শ প্রভৃতি ইন্দ্রিয়গুলোর বিষয় আসক্তি দূর করে- ভগবানের প্রতি সম্পূর্ণ আত্মনিবেদন করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ভগবানের প্রতি ভক্তের আত্মনিবেদনের মাধ্যমে- ভক্তের মধ্যে জাগ্রত হয় শুদ্ধ, পবিত্র ভগবদ্ভক্তি। আর শুদ্ধ, পবিত্র ভগবদ্ভক্তির মাধ্যমে ভক্ত জন্মজন্মান্তরীণ কামনা-বাসনা থেকে মুক্ত হয়ে পরম শান্তি লাভে ধন্য ও কৃতার্থ হয়।