া স্বামী দিগি¦জয়ানন্দ
‘আ’ অর্থে ব্যাপ্তি; ‘রতি’ অর্থে প্রেম, ভালাবাসা ও অনুরাগ। যে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রীভগবানের নিজের প্রীতি বর্ধিত হয় অর্থাৎ তিনি ভক্তের প্রতি প্রসন্ন বা সন্তুষ্ট হন এবং ভগবানের প্রতিও ভক্তের প্রেম, প্রীতি, ভালবাসা, ভক্তি ও অনুরাগ বৃদ্ধি পায় তাকে আরতি বলে।
অতএব আরতি ভগবানের প্রতি ভক্তের অন্তরের গভীর ভাবভক্তি পূর্ণ একটি মহা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান। ভগবানের প্রতি ভক্তের অন্তরের ভাব ও ভক্তির মাধ্যমে, আকুলতা-ব্যাকুলতা প্রকাশের মাধ্যমে ও সম্পূর্ণ আত্মনিবেদনের মাধ্যমে, আরতির অনুষ্ঠান হয় সার্থক ও সুন্দর। ভাব ও ভক্তি শূন্য আরতি তাই কেবল নাচানাচি বা অঙ্গবিক্ষেপ ছাড়া অন্য কিছু নয়। আর ওরকম আরতির মাধ্যমে ভগবানের আশীর্বাদ পাওয়া যায় না কিছুই। যুগাচার্য স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজ বলেছেন, আন্তরিক ভাবভক্তি নিয়ে প্রতিদিন পূজারতির মাধ্যমে আমার শক্তি সকলের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। গুরু শক্তি লাভের ইহা একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায়। শাস্ত্রীয় পূজার বিধান সহজ নয় বরং জটিলও বলা যায়। কিন্তু আরতির অনুষ্ঠান খুবই সহজ সাধ্য। কারণ আরতির অনুষ্ঠান কেবল মাত্র ভাব ও ভক্তির মাধ্যমে সুসম্পন্ন হয়। যারা শাস্ত্রীয় পূজার বিধি ও মন্ত্র জানেন না তারা ভক্তি ভাবের সঙ্গে একমাত্র আরতির মধ্য দিয়ে সকল পূজার ফল লাভ করতে পারেন। তাই ভাব ও ভক্তি পূর্ণ আরতির অনুষ্ঠান হলো সকল পূজার সার।
শাস্ত্রীয় পূজা যদি বিধিহীন ও মন্ত্রহীন হয়, তবে ভক্তি পূর্ণ আরতির মধ্য দিয়ে তা সম্পূর্ণতা লাভ করে। এ প্রসঙ্গে দেবাদিদেব শিব, দেবী পার্বতীকে বলেছেন-
“মন্ত্রহীনং ক্রিয়াহীনং যৎকৃতং পূজনং হরেঃ।
সর্ব্বং সম্পূর্ণতামেতি কৃতে নীরাজনে শিবে ?”
অর্থ: হে দেবী পার্বতী, শ্রীভগবানের পূজা যদি মন্ত্রহীন ও ক্রিয়াহীন হয়, তবে নীরাজন বা আরতির মাধ্যমে তা সম্পূর্ণতা লাভ করে।লেখক:সভাপতি, শ্রীশ্রী প্রণব মঠ, বাংলাদেশ