সিপিআই-এর প্রতিবেদন ট্রাম্প প্রশাসনে সৌদি লবিস্ট
ডেস্ক রিপোর্ট : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্কিন সফরের দু’দিন আগে বড় ধাক্কা খেল পাকিস্তান। তাদের সঙ্গে সবরকম সম্পর্ক ছিন্ন করতে মার্কিন কংগ্রেসে একটি দ্বিদলীয় প্রস্তাব পেশ করেছেন বর্ষীয়ান রিপাবলিকান নেতা টেড পো এবং ডেমোক্র্যাটিক নেতা রিক নোলান। শুক্রবার সকালে মার্কিন কংগ্রেসে বিলটি পেশ করেছেন তারা। তাতে বলা হয়েছে, ‘ন্যাটো সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও এতদিন পাকিস্তানকে অন্যতম সহযোগী দেশ হিসেবে স্বীকার করে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তার মর্যাদা রাখেনি ইসলামাবাদ। সন্ত্রাসের মোকাবিলার জন্য তাদের যে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেওয়া হয়েছিল, তা সন্ত্রাসবাদীদের পুষতে কাজে লাগিয়েছে তারা। সন্ত্রাস নির্মূল করার বদলে দেশের মাটিতে সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছে তারা। এতকিছুর পর ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা উচিত নয়।’ আজকাল
ওয়াশিংটন ডিসিতে দাঁড়িয়ে কড়া ভাষায় পাকিস্তানকে আক্রমণ করেছেন টেড পো। তিনি বলেছেন, ‘পাকিস্তানের হাতে নিরীহ মার্কিন নাগরিকদের রক্ত লেগে রয়েছে। ওসামা বিন লাদেনকে দেশে আশ্রয় দেওয়া হোক বা তালিবান জঙ্গিদের সমর্থন, ভিন্ন মতাদর্শীদের নিকেশ করাই যাদের লক্ষ্য, সেই সক্রিয় সন্ত্রাসবাদী এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলিকে বরাবর সমর্থন জুগিয়ে এসেছে ইসলামাবাদ। তাই ওদের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক রাখাই উচিত নয়। ওদের ন্যূনতম সাহায্যটুকুও দেওয়া উচিত নয়। আমাদের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র যাতে ওদের হাতে না পৌঁছায়, অবিলম্বে সেই ব্যবস্থা করা উচিৎ।’
ন্যাটোর সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও ২০০৪ সালে পাকিস্তানকে সহযোগী দেশের স্বীকৃতি দেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। যাতে পাকিস্তানের সাহায্যে আল-কায়দা এবং তালিবানকে নিকেশ করতে পারে মার্কিন বাহিনী। ন্যাটোর সদস্য নয়, কিন্তু সহযোগী দেশ বলে পাকিস্তানে প্রচুর সামরিক সরঞ্জাম পৌঁছে দেয় মার্কিন সরকার। অস্ত্র কেনাবেচা সংক্রান্ত একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কোটি কোটি ডলার ঋণ মঞ্জুর করার পাশাপাশি, মার্কিন সেনার আধুনিক সাজ-সরঞ্জাম ব্যবহারের অনুমতি পায় পাকিস্তান। বিভিন্ন গবেষণামূলক কাজে অংশগ্রহণেরও সুযোগ পায়। কিন্তু পাকিস্তান মার্কিন সরকার প্রদত্ত সমস্ত সুযোগ সুবিধার অপব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ রিক নোলানের। তার দাবি, ‘সবসময়ই মার্কিন সরকারের ভালমানুষির সুযোগ নিয়েছে পাকিস্তান। প্রমাণ করেছে ওরা মোটেই আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র নয়। গত ১৫ বছর ধরে পাকিস্তানকে যে কত বিলিয়ন টাকা জোগানো হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। যাতে ওই টাকায় সন্ত্রাস নির্মূল হয় আবার আমাদের নিরাপত্তাও বজায় থাকে। কিন্তু আদতে কিছুই হয়নি। তাই এবার জেগে ওঠার সময় হয়েছে। ছবিটা তো পরিষ্কার! যে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলিকে নির্মূল করার কথা ছিল, তাদের সঙ্গেই হাত মিলেয়েছে পাকিস্তান।’
মার্কিন প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে আগামী রোববার দু’দিনের ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সন্ত্রাস দমন ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি। সীমান্ত সন্ত্রাসের জেরে এমনিতেই ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। তারমধ্যে মার্কিন কংগ্রেসে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার প্রস্তাবে আশার আলো দেখছেন দিল্লি। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ