সহযোগিতা চেয়ে পরিবর্তে লুটপাট-ছিনতাইর শিকার
আনোয়ারুল করিম : ‘নিজের আঘাত নিয়েই যখন স্বামীর লাশ নিয়ে বিলাপ করছিলাম, তখন কিছু লোক সহযোগিতা না করে আমার স্বর্ণালঙ্কার, টাকা-ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। আমার কান্নাতেও তাদের মন গলেনি, তারা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়’।
এভাবেই নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ঈদে বাড়ি ফেরার পথে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সিমেন্টবাহী ট্রাক উল্টে স্বামীহারা আহত যাত্রী শরিফা বেগম।
শনিবার ভোররাতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে পীরগঞ্জের কলাবাগান নামকস্থানে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু, নারীসহ ১৭ জন নিহত হন।
খবর পেয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে এগিয়ে আসে স্থানীয়রা। কিন্তু তাদের মধ্যে এক শ্রেণির লোকেরা হতাহতদের শরীর থেকে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে ভুক্তভোগীরা জানায়। তাদের অভিযোগÑ সাহায্য করার নাম করে এসব লোক তাদের সঙ্গে থাকা মালামাল ও ট্রাভেল ব্যাগ পর্যন্ত লুট করেছে।
শরিফা বেগম বলেন, আমার নিজের আঘাতের জন্য যখন অন্যের সহযোগিতা চাচ্ছিলাম, তখন স্থানীয় কিছু লোক আমার গলার চেইন, হাতের চুড়ি-আংটি এবং টাকা ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। আমি তাদেরকে বাঁধা দিতে গেলে তারা ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয়।
একই অভিযোগ করেন নিহত যাত্রী দেলোয়ারের স্ত্রী মুক্তা বেগম, নিহত আলমগীরের স্ত্রী খাদিজা বেগম, নিহত মনিরুজ্জামানের স্ত্রী আফরুজা বেগম, আহত যাত্রী জামিনা বেগমসহ কয়েকজন।
পীরগঞ্জ এলাকায় মহাসড়কে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই এক শ্রেণির মানুষ হতাহতদের শরীর থেকে জিনিসপত্র লুটপাট করে থাকেন বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্ষার সময় এখানে সড়ক দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। এ সময় মহাড়কের পাশে থাকা বিকৃত মানসিকতার লোভী মানুষেরা দুর্ঘটনার শব্দ পাওয়া মাত্রই হ্যারিকেন-ছাতা নিয়ে উদ্ধারের নামে এগিয়ে এসে লুটপাট করে থাকে। সম্পাদনা : রিকু আমির