প্রিয়াংকা পান্ডে: মাত্র ১৮ বছর বয়সে থাইল্যান্ডের স্পেশাল কৌশল ‘মুয়া থাই’ শেখা শুরু করে রুকসানা বেগম। জিমে গিয়ে মুয়া থাই সম্পর্কে জেনে এবিষয়ে উদ্বুদ্ধ হয় সে। এরপর কেটে গেছে ১৫টি বছর। নিরলস পরিশ্রম করে ৩৩ বছর বয়সে বিশ্ব মুয়া থাই কিকবক্সিং চ্যাম্পিয়ন হলেন রুকসানা। ইংল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশি মুসলিম পরিবারে জন্ম রুকসানার। মুসলিম সমাজের বেড়াজালে বড় হয়ে বেশ গোপনেই বাকলাশ দলে যুক্ত হয়ে ট্রেনিং নিতে শুরু করেছিল সে। ট্রেনিং বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে প্রায় ৫ বছর বিভিন্ন ট্রেনিং বিষয়ক উপহার, ট্রফি নিজের পরিবারের থেকে লুকিয়ে রেখেছিল রুকসানা। এখন আর নিজের বিদ্যা লুকিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই রুকসানার। রুকসানাই প্রথম মুসলিম নারী , যে কিনা মুয়া থাইয়ে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।
স্থাপত্যবিদ্যা নিয়ে পড়া রুকসানা ১ বছর কাজ করেছেন এ বিষয়ে। তবে ১বছর কাজ করে তিনি বুঝতে পারেন তার আসল লক্ষ্য মূলত স্থাপত্যবিদ হওয়া নয়। তিনি মনে প্রাণে ভালোবাসেন মুয়া থাই।
এবিষয়ে নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে রুকসানা বলেন,‘আমি আমার এই খেলাকে পরিবারের কাছে লুকিয়ে রেখেছিলাম কারণ আমি ভয় পাচ্ছিলাম,যদি তারা আমার এই কসরতকে দাম না দেয়! কারণ একজন পুরুষতান্ত্রিক বাংলাদেশি মুসলিম পরিবারে নারীকে এতোটা মুল্যায়ন করা হয় না।’
রুকসানা আরো বলেন,‘ আমি প্রতি রোববার চুপিচুপি ট্রেনিং করতে যেতাম। পরিবারকে বলা ছিল জিমে যাচ্ছি তবে তারা জানতো না জিমটি ছিল মার্শাল আর্ট জিম।’
২০০৯ সালে প্রথমবার জিবি টিমে খেলার জন্য নির্বাচিত হন রুকসানা এবং সেখানে ব্রোঞ্জ মেডেল জিতেন তিনি। এরপর ২০১০ সালে ব্রিটিশ অ্যাটমওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন রুকসানা। ২০১৩ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার জন্য যুদ্ধ শুরু করেন তিনি।
বর্তমানে সায়েন্স টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করছেন রুকসানা। পাশাপাশি এলাকার বাচ্চাদেরকে কিকবক্সিং শেখানো রয়েছে কাজের তালিকায়। ঢাকা ট্রিবিউন