ইসমাঈল হুসাইন ইমু : গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন আরও পাঁচ জঙ্গিকে খুঁজছে পুলিশ। তাদের মধ্যে অন্তত তিনজনকে গ্রেফতার করতে পারলেও তদন্ত শেষ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, জঙ্গি সোহেল মাহফুজ হলো গুলশান হামলার অস্ত্র ও গ্রেনেড সরবরাহের মূলহোতা। সে জেএমবির পুরাতন ধারার সঙ্গে যুক্ত ছিল। জেএমবির শীর্ষ ৬ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর হলে সংগঠনটির আমির হয় সাইদুর রহমান। ওই সময় জেএমবির নীতি নির্ধারণী কমিটির সদস্যপদ পায় মাহফুজ। ২০১০ সালের দিকে সাইদুর রহমান গ্রেফতার হয়। এরপর দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে উত্তরাঞ্চলে জেএমবিকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল মাহফুজ। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে নিহত নব্য জেএমবির সমন্বয়ক তামিম আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল। পরে সে নব্য জেএমবিতে যুক্ত হয়। জঙ্গি বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট গুলশান হামলায় দুবাই থেকে আসা ১৪ লাখ টাকা বাংলাদেশে গ্রহণ করে বলে তথ্য রয়েছে তদন্ত সংস্থার কাছে। বাকি দুই জঙ্গির একজন হলেন স্বপরিবারে সিরিয়ায় পলাতক ডাক্তার রোকন। গুলশানে জঙ্গি হামলার আগে নিউ জেএমবির তহবিলে টাকা দেয় ডাক্তার রোকন। আরেক জঙ্গি ছোট মিজান গুলশান হামলাসহ নব্য জেএমবির দেশব্যাপী হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গ্রেনেডের যোগানদাতা। পুলিশ জানায় দুই মিজানের নেতৃত্বে গুলশান হামলার অস্ত্র ও গ্রেনেড সরবরাহ করা হয়। তাদের দুই জনের বাড়িই চাঁপাইনবাবগঞ্জে। তাদের একজন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান যাকে এরই মধ্যে গুলশান হামলার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন ছোট মিজানকে খুঁজছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় তিন বাংলাদেশি নাগরিকসহ ২০ জন নিহত হন। অন্যদের মধ্যে ৯ জন ইতালির, ৭ জন জাপানের এবং একজন ভারতীয়। এছাড়া জঙ্গিদের হামলার শুরুতেই তাদের আক্রমণে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। রেঁস্তোরার ভেতরে রাতভর জিম্মি ছিলেন অন্তত ২৪ জন, যাদের প্রায় ১১ ঘণ্টা পর পরদিন সকালে সেনা কমান্ডো পরিচালিত অপারেশন থান্ডারবোল্টের সময় উদ্ধার করা হয়। এছাড়া রাতের বিভিন্ন সময় উদ্ধার করা হয় আরও অন্তত ৭ জনকে। অপারেশন থান্ডারবোল্টের পর রেঁস্তোরা থেকে ৫ জঙ্গিসহ ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া পালাতে গিয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরেক রেস্তোরাঁকর্মী। এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের হওয়া মামলাটি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তদন্ত করছে।সম্পাদনা: সাইদ রিপন