দার্জিলিং আবার বিক্ষোভে উত্তাল, নিহত ২
আনোয়ারুল করিম : পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পাহাড়ে গতকাল শনিবার নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে। গত শুক্রবার গভীর রাতে পুলিশের গুলিতে তাদের এক সমর্থক নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট। তারই প্রতিবাদে গতকাল শনিবার সকাল থেকে সোনাদায় একটি থানা ও বিশ্ববিখ্যাত ট্রয় ট্রেনের একটি স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশ বুথ ও গাড়িতেও। সেখানে পুলিশের গুলিতে আরো এক বিক্ষোভকারী নিহত হয় বলে দাবি করেছে বিক্ষোভকারীরা। খবর বিবিসির
শনিবারের বিক্ষোভ সামাল দিতে পুলিশকে প্রথমে লাঠিচার্জ করতে হয়, তারপরে কাঁদানে গ্যাসের শেল, অবশেষে রবার বুলেট ব্যবহার করতে হয়েছে। স্থানীয় সূত্রগুলি বলছে দার্জিলিংয়েও একজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে কিন্তু প্রশাসন এখনও দ্বিতীয় মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেনি।
চকবাজারে মোর্চা যখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল সে সময় গুলি চলার খবর পাওয়া যায়। পুলিশের গুলিতে এক সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে মোর্চা। যদিও পুলিশ গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। শনিবার জিএনএলএফ-এর কয়েকশ সমর্থক তাশির মৃতদেহ নিয়ে মিছিল করে সোনাদা থেকে দার্জিলিং যাচ্ছিল। তখন পুলিশ মিছিলটি আটকানোর চেষ্টা করলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশকে লক্ষ্য করে জিএনএলএফ ইট-পাথর ছোড়ে। সোনাদা থানায় ভাঙচুর চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয় জিএনএলএফ সমর্থকরা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় দার্জিলিয়ের খাদ্য সরবরাহ দফতর এবং ডিএসপির টাউন অফিস। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে এবং গুলি ছোড়ে।
শনিবার নতুন করে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে গোর্খা ন্যাশানাল লিবারেশন ফ্রন্ট বা জিএনএলএফ দাবি করেছে সোনাদা এলাকায় তাদের এক সহকর্মী যখন অনেক রাতে ওষুধ কিনে বাড়ি ফিরছিলেন, তখনই পুলিশ তাকে গুলি করে মেরে ফেলে। প্রশাসন এই দাবি উড়িয়ে দিলেও কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, ‘কী করে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কারও যদি দোষ থাকে তাহলে শাস্তি দেওয়া হবে তাকে।’ একই সঙ্গে মমতা ব্যানার্জী সহিংসা পরিত্যাগ করলে পাহাড়ের সব রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি এও অভিযোগ করেছেন যে, দার্জিলিংয়ে সহিংসা থামাতে যে পরিমাণ কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী চাওয়া হয়েছিল, তা দিল্লি থেকে পাঠানো হয়নি। তবে শনিবার নতুন করে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পরে সোনাদা আর দার্জিলিং শহরে এক কলাম করে মোট দুই কলাম সেনা নামানো হয়েছে। তারা রাস্তায় টহল দিতে শুরু করার পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে বলে দার্জিলিংয়ের স্থানীয় সাংবাদিকরা জানাচ্ছেন। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ