যুক্তরাজ্য থেকে ২টি বিশেষ যুদ্ধবিমান কিনছে বাংলাদেশ
আনোয়ারুল করিম : আকাশপথে সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জন্য দুটি সি-১৩০জে সি-ফাইভ বিমান কিনবে সরকার। সামরিক ইস্যু নিয়ে কাজ করা দিল্লিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডিফেন্স ডট নেট এই খবর জানিয়েছে।
দুই যুদ্ধবিমান ক্রয়ের বিষয়টি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রতিরক্ষা খাতে বাজেটে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। ডিফেন্স ডট নেট জানায়, এশিয়ায় নবম দেশ হিসেবে সি-১৩০ জে বিমান কিনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ ধরনের বিমান মূলত যুদ্ধক্ষেত্রের মালামাল পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে সি-১৩০ই হারকিউলিস এয়ারক্র্যাফট ও দুইটি এল-৪১০ টার্বুলেট নামে পণ্যবাহী বিমান রয়েছে। সি-১৩০ জে’র সি ফাইভ ভার্সন আরও উন্নত প্রযুক্তির।
সামরিকতা-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খোঁজ করে দেখা যায়, সি-১৩০ জে-এর অ্যালিসন এ ই টার্বোপ্রপ ইঞ্জিন এবং ডাউতি এরোস্পেসের কম্পোজিট প্রপেলার রয়েছে যা বিমানটিকে ঠা-া, গরম, কুয়াশা এবং মরুভূমি সব পরিবেশে সমানভাবে কার্যকর থাকতে সহায়তা করে। সরকারের একটি সূত্র জানায়, সামরিক বাহিনীকে ত্রিমাত্রিক রূপ দিতে অত্যাধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম কিনছে বাংলাদেশ। চীনের দুটি ও যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ নৌবাহিনীতে সংযোজন করা হয়েছে। এর আগে ডিসেম্বরে রাশিয়ান কমব্যাট ট্রেইনার ইয়াক ১৩০ বিমান ও মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ হেলিকপ্টার সংযোজন করা হয়েছে। ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে সেনাবাহিনীতে সংযোজিত হতে যাচ্ছে ৩০০টি এপিসি। বেশিরভাগ যুদ্ধাস্ত্র চীনের কাছ থেকে সংগ্রহ করলেও অন্য দেশ থেকেও অস্ত্র কিনছে বাংলাদেশ।
স্টকহোমভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপরির হিসাব অনুযায়ী- ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সাতটি দেশ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করেছে। এগুলো হচ্ছে- চীন, ইতালি, পাকিস্তান, রোমানিয়া, রাশিয়া, তুরস্ক ও যুক্তরাজ্য। আবার ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের হিসাব পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১১টি দেশ থেকে অস্ত্র কিনেছে বাংলাদেশ। এগুলো হলো- চীন, ইতালি, রাশিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, চেক প্রজাতন্ত্র, ফ্রান্স, জার্মানি, সার্বিয়া, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০০৪-০৯ সময়ে পাকিস্তান ও রোমানিয়া থেকে সরকার অস্ত্র সংগ্রহ বন্ধ করে দিয়ে নতুন ছয়টি দেশ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করছে। তবে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে চীন থেকে বড় আকারে অস্ত্র সংগ্রহ করে থাকে। এর পেছনে রাজনৈতিক সম্পর্ক, দুই বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক, অস্ত্রের মূল্য, পেমেন্ট শর্তসহ বিভিন্ন বিষয় জড়িত। সিপরির তথ্য অনুযায়ী- যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে দুটি যুদ্ধজাহাজ ও যন্ত্রাংশ বিশেষ সুবিধার আওতায় কিনেছে। বাংলাদেশ সার্বিয়া থেকে হালকা যান সংগ্রহ করেছে এবং ফ্রান্স ও জার্মানি থেকে হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ ক্রয় করেছে। যুদ্ধবিমানসহ সব ধরনের বিমান ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির সুষ্ঠু, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী রক্ষণাবেক্ষণ এবং ওভারহোলিংয়ের জন্য নির্মিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু অ্যারোনটক্যিাল সেন্টার এবং পূর্ণাঙ্গ ঘাঁটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বঙ্গবন্ধু ও কক্সবাজার বিমান ঘাঁটি। সম্পদনা:হুমায়ুন কবির খোকন