ইসির সঙ্গে সংলাপ ও আন্দোলনের সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরের দিকে তাকিয়ে নেতাকর্মীরা
শাহানুজ্জামান টিটু : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সামনে বড় তিন ইস্যু। এক. আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে সহায়ক সরকারের রূপরেখা প্রদান, দুই. নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপ আর তিন. সরকার ও নির্বাচন কমিশন যদি বিএনপির দাবির প্রতি গুরুত্ব না দেয় তাহলে আন্দোলন করে দাবি আদায় করা। দলের নেতারা মনে করেন আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যেই বড় দুটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিএনপিকে। এরপর আন্দোলন প্রসঙ্গ।
দলটির নীতিনির্ধারকরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হওয়াটাকে বেশি জরুরি বলে এটাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তারা মনে করেন নির্বাচনকালীন সময়ে একটি দল নিরপেক্ষ সরকার থাকলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে একটি অবাধ নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সহজ হবে। বিগত সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনগুলোর মতো দেশ-বিদেশে এর গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের বিষয়ে দলীয়ভাবে বেশকিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা নির্বাচনে যেতে চাই এটা সত্য তবে সেই নির্বাচন হতে হবে একটি দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। ১৯৯০ সালে তো সব দলের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচনকালীন সরকার হয়েছিল। এটা নির্ভর করছে বর্তমানের যারা ক্ষমতাসীন তাদের ওপর। তারা ইচ্ছে করলেই কিন্তু উদ্ভূত এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এছাড়া ইসির সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আমদের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচনি আইনের সংশোধনসহ আরও কিছু বিষয়ে আলোচনা হবে। যেহেতু ইসির হাতে নির্বাচনের আগে সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষমতা আছে। তাই ১৩৩টি আসনে যে অসামঞ্জস্যতা আছে তা দূর করে ৩০০ আসন পুনর্বিন্যাস করার জন্য আমরা কমিশনের সঙ্গে সংলাপে দাবি জানাবো।
তবে সহায়ক সরকারের রূপরেখা, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপ ও আন্দোলন এই তিন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখন থমকে আছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরের কারণে। চলতি মাসের ১৪/১৫ অথবা শেষের দিকে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি সেখানে যাওয়ার পর তার সঙ্গে ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্তে আলোচনা হবে। সেখানে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সহায়ক সরকারের রূপরেখা, ইসির সঙ্গে সংলাপ, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দলের প্রার্থী মনোনয়নসহ সহায়ক সরকারের দাবি সরকার না মানলে সেক্ষেত্রে বিএনপি কিভাবে আন্দোলনের গড়ে তুলবে এ বিষয়ে মা ও ছেলের মধ্যে আলোচনা হবে। এছাড়া মা ও ছেলের বিরুদ্ধে মামলা, দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, দলের সাংগঠনিক অবস্থা এসব বিষয়ে আলোচনা হবে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের নেত্রী লন্ডনে যাবেন চিকিৎসার জন্যে। তার চোখের ও পায়ের সমস্যা রয়েছে। অনেক আগেই তার যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা সমস্যার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। এবারও তার যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি সেখানে যাওয়ার পর তার সঙ্গে তারেক রহমানের একান্তে কথা হবে। দলের এই শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে আলোচনায় দলের অনেক দিকনির্দেশনা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই এই সফরকে আমরা দলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি।