রিয়াজ-মিশা সওদাগরকে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির বয়কট
শাকিল আহমেদ : চলচ্চিত্র অঙ্গনে অস্থিরতার মধ্যে শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দুই অভিনেতার সঙ্গে প্রযোজক ও প্রেক্ষাগৃহ মালিক খোরশেদ আলম খসরুকে বয়কটের সিদ্ধান্তও জানানো হয়। যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র নিয়ে পাল্টপাল্টি অবস্থানের মধ্যে শিল্পী সমিতির নির্বাচনের পর একপক্ষের বিরুদ্ধে অন্যপক্ষের কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির মধ্যে প্রদর্শক সমিতি এই ঘোষণা দিল। ঈদুল ফিতরে যৌথ প্রয়োজনার দুই চলচ্চিত্র বস টু ও নবাব মুক্তি দেওয়ার জের ধরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহের মালিক ও চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদকে। সেদিনের হামলার ঘটনায় যথাযথ বিচার না পেয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী শোয়েব রশিদ।
তিনি বলেন, রিয়াজ ও মিশা সওদাগর অভিনীত কোনো চলচ্চিত্র সিনেমা হলে প্রদর্শিত হবে না। একইভাবে খোরশেদ আলম খসরু প্রযোজিত কোনো চলচ্চিত্রও কোনো প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হবে না। প্রদর্শক সমিতির লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ব্যবসায়িক স্বার্থ বিবেচনায় ঈদে যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র বস টু ও নবাব এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। এ কারণে সেন্সর বোর্ডের সামনে প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ও সেন্সর বোর্ডের সদস্য ইফতেফার উদ্দিন নওশাদের উপর হামলা চালায় অভিনেতা রিয়াজ, মিশা সওদাগর ও প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু এবং তাদের সহযোগীরা।
এই হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনের পাশাপাশি তথ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার পর তথ্য সচিব, আইন সচিব, ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দোষিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছিলেন বলে জানান তারা।
কাজী শোয়েব বলেন, নওশাদ সাহেবকে তারা তখন মামলা না করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু আইনি কোনো অগ্রগতি না দেখে ক্ষুব্ধ হন চলচ্চিত্র পরিবেশকরা। পুলিশের সামনেই ওই হামলার ঘটনা ঘটলেও এ বিষয়ে সরকারি কর্তাব্যক্তিরা আশ্চর্যজনকভাবে নীরব ভূমিকা পালন করেছে। শুধু তথ্যমন্ত্রী নিন্দা জানিয়েছিলেন। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না দেখে প্রদর্শক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় রিয়াজ, মিশা সওদাগর ও খসরুকে বয়কটের সিদ্ধান্ত আসে।
যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র চালানোর বিষয়ে প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের আগ্রহের কারণ জানতে চাইলে নওশাদ বলেন, আমরা চাই ভালো ছবি। ভালো ছবি দর্শক টানে এবং দর্শক টানলেই সিনেমা হল বাঁচবে। বর্তমানে শাকিব খান অভিনীত ছাড়া অন্য কোনো ছবি তেমনভাবে দর্শক টানতে পারে না। তাই বাধ্য হয়ে আমরা যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রকে গ্রহণ করছি। সারাবছর আয়নাবাজির মতো ভালো কাহিনীনির্ভর ছবি পাওয়া গেলে প্রদর্শক বা হল মালিকরা যৌথ প্রযোজনার ছবির দিকে ঝুঁকতেন না বলে দাবি করেন তিনি। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ