সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি রায় না পড়ে মন্তব্য করে অনেক সাংসদ পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন
এস এম নূর মোহাম্মদ : ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় না পড়ে যে কটূক্তি করা হয়েছে তাতে অনেকেই সংসদ সদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ব্যানারে গতকাল মঙ্গলবার সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ কথা জানান সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন। সেইসঙ্গে সংসদ সদস্যদের আপত্তিকর ওই বক্তব্যেরও নিন্দা জানিয়ে তা প্রত্যাহারের জন্য স্পিকারের কাছে দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এই কর্মসূচির পরপরই সহ সভাপতি অজি উল্লাহর নেতৃত্বে সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটিতে থাকা আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কর্মকা-ের অভিযোগ তোলেন।
লিখিত বক্তব্যে জয়নুল আবেদীন বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে সংসদ সদস্যরা যে কটুক্তি করেছেন এতে সংবিধানেরই অবমাননা করা হয়েছে। খাটো করা হয়েছে বিচার বিভাগের মর্যাদাকে। বলা হয়েছে সংসদ যদি এ রায় গ্রহণ না করেন তাহলে তা কার্যকর হবে না। এমন বক্তব্যে স্বৈরাচারি চরিত্রের আভাস পাওয়া যায়। তারা রিভিউ করে রায় পরিবর্তনের জন্য বিচারকদের ভয় দেখাচ্ছেন ও চাপ দিচ্ছেন। এ অবস্থায় আমরা বসে থাকতে পারি না।
তিনি বলেন,কয়েকজন সংসদ সদস্য সংসদে সুপ্রিম কোর্ট, প্রধান বিচারপতি ও সিনিয়র আইনজীবীদের কটাক্ষ করে চরম আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন, যা কোন ভাবেই কাম্য নয়। সংসদ সদস্যরা সংসদ পরিচালনার বিধি-বিধান সম্ভবত ভুলে গিয়েছিলেন।যে ব্যক্তি তার সম্পর্কে সমালোচনার জবাব দিতে পারবে না, অর্থাৎ সংসদে উপস্থিত নেই, তার সম্পর্কে সংসদে কোনো আলোচনা করা যায় না। অথচ সংসদ সদস্যরা দুজন প্রবীণ আইনজীবী এমনকি প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছেন, যা সুস্পষ্টভাবে আদালত অবমাননার শামিল।
এদিকে আওয়ামী সমর্থিত অজি উল্লাহ বলেন,এ ধরনের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিচার বিভাগের কোনো স্বার্থ রক্ষা হয়নি, হবেও না। বরং তা বিচার বিভাগের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের বিষয়ে জনগণের মাঝে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, রায়ের গঠনমূলক সমালোচনা কখনোই বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয়। আর সংসদের ভেতরে আলোচিত কোনো বিষয় নিয়ে সমিতির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করা রাজনেতিক উদ্দেশ্য হাসিল ছাড়া আর কিছুই নয়। সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক রাষ্ট্রের দুটি স্তম্ভের মধ্যে ফাটল ধরানোরো চেষ্টা করছেন বলেও দাবি করেন সহসভাপতি অজি উল্লাহ। সম্পাদনা:হুমায়ুন কবির খোকন