উম্মুল ওয়ারা সুইটি : মুখ বুজে সহ্য করার চিন্তা থেকে প্রত্যেককে বেরিয়ে আসতে হবে। ধর্ষনের ঘটনার দায় মাথায় নিয়ে কেন শুধু মেয়েটি ও তার পরিবার কষ্ট ভোগ করবে? ধর্ষকের পরিবারের ভূমিকা প্রয়োজন। নিজের ধর্ষক সন্তানকে ত্যাগ করতে হবে। ধর্ষকের শাস্তি পরিবার থেকে শুরু করতে হবে।
শরিয়ত পুর এলাকার হালিমা আক্তারের বাবা আজমত আলী বলেন, আমার মেয়ের ক্ষতি হইছে, আবার সমাজ আমাদেরই শাস্তি দিল? এই টা আমি মানতে পারি নাই। গত বছর আমার ১২ বছরের মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার সময় বখাটেরা তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় আশপাশের লোকজন মেয়েকে উদ্ধার করে। মেয়ে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে মেয়েকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই। দুদিন পর বাড়িতে এসে শুনি মাতব্বররা এসে প্রস্তাব দিয়েছে, মেয়েকে যেনো আমি ওই বখাটের সঙ্গে বিয়ে দেই। যেহেতু একটা ঘটনা ঘটেই গেছে। আমি রাজি না হলে আমাকে তারা ভয় দেখায়, মেয়ের আর বিয়ে হবে না। আর মামলা না করতে চাপ দিতে থাকে।
আজমত বলেন, ছেলের বাবা-মা এবং আত্মীয় স্বজনরাও আসে একই প্রস্তাব নিয়ে। আমি বললাম, আমি দেখে শুনে এই বখাটে ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে পারবো না। আমি ছেলেকে ত্যাজ্যা করার প্রস্তাব দিলে তার বাবা-মা ক্ষেপে গিয়ে আমার মেয়ের নামে বদনাম করতে থাকে। আমার মাথায় জিদ চেপে যায়। আমি মামলার করার কথা বলি। এরপর ছেলের মা-বাবা উল্টো আমার মেয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এবং বলে আমি মেয়েকে শিখিয়ে দিয়েছি এই কাজ করতে। আমি নাকি টাকার জন্য এই কাজ করেছি।
এভাবে আমাকে ছোটখাটোভাবে হুমকি-ধামকির শিকার হতে হয়। এরমধ্যে আমার ছেলেমেয়েদের লেখা পড়া বন্ধ হয়ে যায়। উপায় না দেখে ঢাকায় চলে আসি। আমি ওই ছেলের মাকে বলেছি, এই রকম ছেলের পক্ষে না গেলে কি হয়? আর শালিসদারদের বলেছি, যেই ছেলে ১২ বছরের মেয়েকে তুলে নিয়ে যেতে পারে, তাকে সবারই বর্জন করা উচিত। এই রকম সন্তানের বাবা-মার উচিত হলো ধর্ষক সন্তানকে ত্যাগ করা। এই কলঙ্কিত সন্তানের জন্য আবার সুপারিশ করবে কেন?