‘বেঁধে দেওয়া সময় ছাড়া রোগী দেখতে ফেরতযোগ্য ভিজিটর ফি লাগবে’
রিকু আমির : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রোগী দেখতে বেঁধে দেয়া সময়ের বাইরে প্রবেশ করলেই ২০০ টাকা দিয়ে ভিজিটর পাস লাগবে। যা হাসপাতাল ত্যাগের সময় সেই ভিজিটর নির্ধারিত কাউন্টারে ‘পাস’ জমা দিয়ে ২০০ টাকা ফেরত পাবেন। ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদককে নিজ কার্যালয়ে বসে বলেন, শীতকালে প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে বিকাল পাঁচটা ও গ্রীষ্মকালে প্রতিদিন বিকাল চারটা থেকে সন্ধা ছয়টা পর্যন্ত রোগী দেখতে প্রবেশ করা যাবে। এক্ষেত্রে ২০০ টাকার ভিজিটর ফি লাগবে না। এই সময়ের বাইরে প্রবেশ করলেই ভিজিটর পাস লাগবে। এটা ফেরতযোগ্য।
কিন্তু এতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের লাভ কী ভাবে, তা ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমানের কাছে টাকা নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি যুক্তি দেখান, প্রথমত : পাস প্রস্তুতে অর্থ খরচ করতে হয়। ভিজিটর পাস যদি ফেরত না দেন, সেক্ষেত্রে গ্রহণ করা ২০০ টাকা দিয়ে সেই পাস বানানো হবে। টাকা নিলে পাস ফেরত দেয়ার তাগিদ থাকবে।
দ্বিতীয়ত : হাসপাতাল ভবনের ভেতর অবাধ যাতায়াত কমে যাবে। এতে করে হাসপাতালের উপর থেকে লোড কমবে, কোলাহল কমবে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সহজ হবে, চিকিৎসক সংশ্লিষ্টরা কাজ করতে ছিমছাম পরিবেশ পাবেন, ক্রস ইনফেকশনের হার কমে যাবে। এসব রোগীদের জন্যই মঙ্গলজনক।
তৃতীয়ত : হাসপাতাল ভবনের ভেতর থেকে রোগী বা স্বজনদের বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি প্রতিরোধ করা যাবে। কেননা, ভেতরে যারা প্রবেশ করবে তাদের কাছে ভিজিটর পাস থাকবে। তার নাম-ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর কোনো রোগীর কাছে যাবেন ইত্যাদি তথ্য লিপিবদ্ধ করা হবে। ভিজিটর পাস ছাড়া কেউ ভেতরে থাকলেই তাকে সহজে সনাক্ত করে বের করে দিতে পারবেন শৃঙ্খলাকর্মীরা। যারা চুরি করার উদ্দেশ্য নিয়ে হাসপাতাল ভবনে প্রবেশ করে থাকেন, তারা রোগীর বা তার স্বজনের আশপাশ দিয়েই ঘোরাঘোরি করেন, সুযোগ বুঝে চুরি করে দ্রুত কেটে পড়েন। ভিজিটর পাস ব্যবস্থার ফলে এইসব অপরাধী হাসপাতাল ভবনে প্রবেশ করতে পারবে না। সর্বোপরি এই ব্যবস্থা হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে।
চতুর্থত : বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন এজেন্সির লোকজনের অবাধ যাতায়ত নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
গত ১০ জুলাই বিকালে ভিজিটর পাস সংক্রান্ত একটি নোটিশ জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারের দেয়ালে সাঁটানো হয়েছে। মিজানুর রহমান বলেন, এ নিয়ম বাস্তবায়নের প্রথমধাপ চলছে। এখন তো কেবল শুরু। একটু সময় লাগবে। তবে এটা যেন বাস্তবায়ন হয়, সেজন্য ঢামেক প্রশাসন সর্বোচ্চভাবে চেষ্টা চালাবে। আর ভিজিটর পাস নিয়ে কোনো গণমাধ্যম যেন বিভ্রান্তিকর বা উস্কানিমূলক সংবাদ পরিবেশন না করেন, সে অনুরোধও জানান তিনি।
সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু