নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘বিরল রোগে’ আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তার চিকিৎসার ব্যাপারে ‘আশাবাদ’ ব্যক্ত করেছেন ডা. সামন্ত লাল সেন। মুক্তার চিকিৎসার জন্য গঠিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বুধবার এ আশার কথা শোনান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা মুক্তা অপচিকিৎসার শিকার হয়েছে। সঠিক সময়ে সঠিক স্থানে তার চিকিৎসা হয়নি। যদি সঠিক সময়ে সে চিকিৎসা পেত তাহলে রোগটা এত বাড়তে পারত না। মেয়েটির হাতের ফাংশন আছে, হাত মুঠ করতে পারে। মেয়েটি রক্তশূন্যতায় ভোগছে। ৭-১০দিন লাগবে অপারেশনের জন্য তাকে তৈরি করতে’।
বুধবার সকালে মুক্তার চিকিৎসার জন্য গঠিত বোর্ডের সদস্যরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করেন। পরে তারা মুক্তার শরীরে সম্ভাব্য চারটি রোগের একটির অস্তিত্বের কথা জানান। এগুলো হলো- চর্ম সংবহনতান্ত্রিক বিকলাঙ্গতা, লসিকানালী/রসবাহী নালীর বিকলাঙ্গতা, একটি জিনগত ব্যাধি যা স্নায়ু টিস্যুতে টিউমার তৈরি করে এবং বহিঃত্বক কোষ পুরু থেকে পুরুতর হওয়া।
মঙ্গলবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তাকে ঢামেক বার্ন ইউনিটে আনা হয়। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, মুক্তা রক্তশূন্যতা ও পুষ্টিহীনতায় ভোগছে। তাকে রক্ত ও পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। তাকে অপারেশনের জন্য ফিট করতে আগামী দু-তিন সপ্তাহ সময় লাগবে।
মুক্তার চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবারই আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা হলেন ঢামেক বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন, ইউনিটের বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, একই ইউনিটের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ খন্দকার, ঢামেক হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলাম, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রায়হানা আউয়াল এবং ঢামেক হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রাশেদ মোহাম্মদ খান।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘বিরল রোগে’ আক্রান্ত মুক্তার সংবাদটি প্রকাশিত হয়। এরপর মুক্তাকে সরকারিভাবে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মুক্তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন।
সম্পাদনা : রিকু আমির