প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিল বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনি
মাসুদ আলম : বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনিকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার লেনিন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে যান তিনি। এ সময় মুক্তামনির মাথায় হাত বুলিয়ে লেনিন বলেন, আমাকে প্রধানমন্ত্রী পাঠিয়েছেন। আমি তার সঙ্গে কাজ করি। তুমি কি প্রধানমন্ত্রীর নাম জান?’ তখন মুক্তামনি বলে, জানি। ওনার নাম শেখ হাসিনা। জুলফিকার লেনিন তাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী তোমার চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। তুমি একদম চিন্তা করবে না। তুমি ভালো হয়ে যাবে। তোমার চিন্তার কোনো কারণ নেই। জবাবে মুক্তামনি বলে, ওনাকে (প্রধানমন্ত্রী) আমার ধন্যবাদ দেবেন।
জুলফিকার লেনিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। তার সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধপত্র হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে দেওয়া হবে। হাসপাতালে মুক্তামনির সঙ্গে থাকা পরিবারের সদস্যদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এর বাইরে পরিবারটির একান্ত ব্যক্তিগত খরচের জন্য হাতখরচ হিসেবে মুক্তামনির বাবা মো. ইব্রাহিম হোসেনের হাতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পাঠানো নগদ টাকাও দেওয়া হয়েছে। হাতখরচের টাকাগুলো ইব্রাহিম হোসেনের হাতে দেওয়ার জন্যই প্রধানমন্ত্রী তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মুক্তার বাবা ইব্রাহিম ও মা আসমা খাতুন জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আসা ডা. জুলফিকার লেনিন মুক্তামনির স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছে। এ সময় তার সঙ্গে ডা. সামন্ত লাল সেনসহ আরও চিকিৎসকরা ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী অনেক বড় মনের মানুষ। ওনার উপকারের কথা সারাজীবন মনে থাকবে। চিকিৎসকরা নিয়মিত মুক্তামনির খোঁজ খবর নিচ্ছেন। মুক্তার হাতের ঘা একটু শুকিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু হাতের ভেতর খুব চুলকানি হচ্ছে। মুক্তা বার বার বলছে, হাতের ভেতরে চুলকাচ্ছে ও ব্যথা হচ্ছে। গত বুধবার রাতে ৩ ঘণ্টা এবং বৃহস্পতিবার সকালে ৩ ঘণ্টা হাত চুলকে দিয়েছেন তিনি। এরপর চুলকানি কিছুটা কমেছে। ব্যথায় মাঝে মধ্যে কাতরাতে দেখা যায়। হাতে ড্রেসিংয়ের কারণে সকাল থেকে ব্যথা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে মুক্তামনিকে ভর্তি করা হয়। বুধবার চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন মুক্তামনি চর্মরোগে আক্রান্ত। ডারমাল ভাসকুলার ম্যালফরমেশন, লিমফেটিক ম্যালফরমেশন, নিউরোফাইব্রোম্যাটোসিস, কনজেনিটাল হাইপারক্যারাটোসিস-এই চারটি চর্মরোগের মধ্যে যে কোনো একটা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে তারা মনে করছেন।
বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, সময় মতো যদি মেয়েটির সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেত তাহলে এ অবস্থা হতো না। তার হাতের ফাংশন ঠিক আছে। অপারেশনের উপযোগী করে তুলতে ৭-১০ দিন সময় লাগবে। তার রক্তশূন্যতা ও অপুষ্টিজনিত সমস্যা রয়েছে। নিয়মিত আমরা তার খবর নিচ্ছি। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ