বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি
সীমা কায়সার : টানা বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও অস্বাভাবিক জোয়ারে সারাদেশে নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বন্যায় বিভিন্ন জেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ। অনেক স্থানে সড়কপথ ও ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, প্রায় সারা দেশে আরও কয়েক দিন মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ চলবে। নদ-নদীর পানি বেড়ে জামালপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার কয়েক লাখ লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
বগুড়া : বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৬২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের রৌহদহ এলাকার ১৪০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়া সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম সরকার বলেন, রৌহদহ বাজারে নির্মিত বাঁধটি ধসে গেলেও তার পেছনে বিকল্প বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি জিও ব্যাগ (বালুর বস্তা) ফেলা হচ্ছে। এই বাঁধটি রক্ষা করা না গেলে বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের সাতটি উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়তে পারে।
গাইবান্ধা : গাইবান্ধায় ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘটের বামতীরে গাইবান্ধা শহর রক্ষা বাঁধ ও সাঘাটায় বি আরই ক্রসবাঁধ ভাঙনের মুখে পড়েছে। মুন্সিরহাট বিয়ারি বাঁধ সংলগ্ন উত্তর সাথালিয়া পয়েন্টে সিডিএমপি প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে পানির তোড়ে ভেসে গেছে। এতে সাঘাটার উত্তর ও দক্ষিণ সাথালিয়া, দীঘলকান্দি, গোবিন্দি, বাঁশহাটা, হাসিলকান্দি, হাটবাড়িসহ ৭ গ্রামে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১৩ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উলিপুর উপজেলার হাতিয়া বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ তলিয়ে যাওয়ায় নতুন করে ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়াও ভাঙনের মুখে পড়েছে বজরা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বালুর বস্তা ফেলে এলাকাবাসী ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে। পানি বেড়ে ৯ উপজেলার ৫০ ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী গ্রাম, চর ও দ্বীপ চরের ২৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত দেড় লাখ মানুষ। দেড় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
শেরপুর : শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি নিন্মাঞ্চলে নেমে যাওয়ায় উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর বাধ দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী।
জামালপুর : জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। জামালপুর জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও সরিষাবাড়ি উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুরসহ আরো কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সম্পদনা : মাকসুদা লিপি