লিউকেমিয়া চিকিৎসায় নতুন পথের সন্ধান, আসতে পারে জিন থেরাপি
ডেস্ক রিপোর্ট : মার্কিন সরকারের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)-এর এক কমিটি জানিয়ে দিল নতুন কায়দায় লিউকেমিয়া এবং আরও কিছু ক্যানসার চিকিৎসা স্বাগত। এ বার শুধু এফডিএ-র অনুমোদনের অপেক্ষা, যা পাওয়া যাবে বলে মনে হয়। তার পর বাজারে আসবে এক বহুজাতিক সংস্থা-আবিষ্কৃত নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি। তা হলে ওই পদ্ধতিই হবে বাজারে-আসা প্রথম জিন থেরাপি। আনন্দবাজার লিউকেমিয়া-আক্রান্ত রোগীর দেহ থেকে নিষ্কাশিত হবে পরম উপকারী টি-কোষ। তার জিন বদলে সেই টি-কোষ আবার চালান করে দেওয়া হবে রোগীর দেহে। জিন-বদলানো এই টি-কোষ এ বার লড়াই করে হারাবে ক্যানসারকে। যেহেতু কোষ মারবে রোগকে, তাই এই পদ্ধতির নাম দেওয়া হয়েছে ‘জীবন্ত ওষুধ’।
পৃথিবীশুদ্ধ বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো এত দিন মগ্ন ছিল এক দৌড়ে। এ রকম জিন থেরাপি আনার লক্ষ্যে। দৌড়ে জিতল কেবল এক সংস্থা, যাদের অর্থানুকূল্যে গবেষণা চলেছিল পেনসিলভ্যানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতে।
যে নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হবে লিউকেমিয়া এবং আরও কিছু ক্যানসারের, তা ওই বহুজাতিক সংস্থার বিজ্ঞানীরা ট্রায়াল দিয়েছিলেন ২০১৫-র এপ্রিল থেকে ২০১৬-র অগস্ট পর্যন্ত ৬৩ জন রোগীর মধ্যে। ওদের মধ্যে ৫২ জন রোগী (৮২.৫%) সেরে উঠেছেন, মারা গিয়েছেন ১১ জন। যাঁরা সুস্থ হয়েছেন তাদের দিকে তাকিয়ে গবেষকরা খুবই উৎসাহী।
নতুন চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া? এ ব্যাপারটা খুবই ভাবিয়েছিল এফডিএ-র বিশেষজ্ঞদের। কারণ, ক্যানসারের দুই চিকিৎসায় কেমোথেরাপি এবং তেজষ্ক্রিয়তা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়াবহতা গবেষকদের চিন্তায় ফেলে। বহুজাতিক সংস্থাটির তরফে এফডিএ-র প্যানেলকে জানানো হয়, নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশ কম।
এফডিএ-র প্যানেলের সামনে কাল যে শুনানি হয়, তাতে উপস্থিত করানো হয় নতুন প্রক্রিয়ায় চিকিৎসাপ্রাপ্ত বেশ কিছু রুগীকে। যাদের এক জন ১২ বছর বয়সি এমিলি হোয়াইটহেড। ২০১২ সালে, এমিলির বয়স যখন ৬, তখন প্রচ- জ্বর, খুব কম রক্তচাপ এবং বুকে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল এমিলি। নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসার পরে এমিলি এখন পুরোপুরি সুস্থ। প্যানেলকে এমিলির বাবা বলেন, ‘এফডিএ এই চিকিৎসা অনুমোদন করলে উপকৃত হবে হাজার হাজার শিশু। আপনারা যারা প্যানেলে বসে আছেন, তারা এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপের সাক্ষী হতে চলেছেন। রক্তের ক্যানসার চিকিৎসাযোগ্য ব্যাধিতে পরিণত হবে।’
সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ