এরদোগানকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত তুরস্কের লৌহমানবী
পরাগ মাঝি : মারামারি থেকে পালিয়ে যান না মিরাল আকসেনার; তুরস্কের লৌহমানবী বলে তিনি খ্যাত। এক সময় তিনি দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৭ সালে যখন তুর্কী সেনাবাহিনী ক্ষমতাসীন সরকারকে উৎখাত করতে উদ্যত হয়, আকসেনা তখন এর নেতৃত্বদানকারীদের বিরুদ্ধে একাই রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। এক জেনারেল সে সময় আকসেরের বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছেড়েছিলেন। কিন্তু এতে বিন্দুমাত্র টলাতে পারেনি লৌহমানবীকে। ২০১৩ সালে এ প্রসঙ্গে তিনি আদালতে বলেছিলেন, ‘আমি তাই করেছিলাম, যা আমার কর্তব্য মনে করেছি।’
যেভাবে আকসের একাই একটি সামরিক বাহিনীকে হারিয়ে দিয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই তুরস্কের বিগত গণতন্ত্রকে আবারও ফিরিয়ে আনবেন বলে আশা করছে তার সমর্থকরা। ইতোপূর্বে তুরস্কের পার্লামেন্টে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সংবিধান পরিবর্তনের উদ্যোগের সময়ও এর তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন আকসের। এ সংক্রান্ত গত ১৬ এপ্রিল ‘হ্যাঁ’ ‘না’ ভোটে তিনি ‘না’ ভোট দিতে তুর্কীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও খুব সামান্য ব্যবধানে ‘হ্যাঁ’ ভোট জিতে গেলে দেশটির সংসদীয় ক্ষমতায় একক কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা হয় এরদোগানের। ভোটে এরদোগান জিতলেও দেশটির রাজনীতিতে আকসেরের অবস্থান আরও পাকাপোক্ত হয়ে যায়। দেশটির বিপুলসংখ্যক লোক এখন আকসেরকেই চায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। দেশটিতে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও নিশ্চিতভাবেই এরদোগানের গলার কাঁটা হতে যাচ্ছেন আকসের।
জানা গেছে, তিনি একটি নতুন দল গঠন করতে যাচ্ছেন। সম্প্রতি এরদোগানবিরোধী ও সুবিচার প্রত্যাশীরা রাজধানী ইস্তাম্বুলে যে বিশাল সমাবেশ করেছে তার একটি বৃহৎ অংশই আকসেরের সমর্থক। দেশটির সংবিধান পরিবর্তনের ভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট জিতে যাওয়ার মাসখানেক পরই ইস্তাম্বুলে নিজ বাসায় ‘টাইম’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এরদোগান প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তার আরামের জায়গাটিকে হারাম করে দেব। কারণ সে জানে আমি তার সত্যিকারের প্রতিদ্বন্দ্বী।’
সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার অভিযোগে তুরস্কে যে বিভাজনের রেখা ফুটে উঠেছে, তা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। স্বাভাবিকভাবেই এরদোগান বিরোধীরা এখন আকসেরের মতো একজন লৌহমানবীকে অবলম্বন করেই দেশটির গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। টাইম অবলম্বনে