বরিশাল বুলসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কাঁদলেন মুশফিক
এম এ রাশেদ : বয়সভিত্তিক ক্রিকেট হিসাব করলে ১৭ বছর, জাতীয় দলের হয়ে সেটি ১২ বছর দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে ইতিবাচক-নেতিবাচক কত মন্তব্যই তো শুনেছেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু বিসিবির অন্যতম পরিচালক ও বিপিএলের দল বরিশাল বুলসের স্বত্বাধিকারী আবদুল আওয়াল তাকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, সে ধরনের মন্তব্য বা অভিযোগ আগে কখনো শুনেছেন কি না, মনে করতে পারেননি মুশফিক।
মুশফিক গত বিপিএল খেলেছেন বরিশাল বুলসের ‘আইকন’ হিসেবে। যদিও তিনি নাকি সে দলে খেলতে রাজি ছিলেন না। বিসিবির অনুরোধেই পরে রাজি হয়েছিলেন। টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে ভালো খেললেও মাঝপথে ছন্দ হারিয়ে ফেলে তার দল। পরে শেষ চারেও উঠতে পারেনি বরিশাল। দলের পারফরম্যান্স যাই হোক, মুশফিকের ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। ১২ ম্যাচে ৩৭.৮৮ গড়ে ৩৪১ রান করে দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবার ওপরে। তবে মুশফিকের অধিনায়কত্ব পছন্দ করেননি আবদুল আওয়াল। শুধু অধিনায়কত্বই নয়, কাল এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কের ‘শৃঙ্খলা’ ও ‘দায়িত্ববোধ’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বরিশাল ফ্র্যাঞ্চাইজির অন্যতম এই মালিক।
মুশফিক গতকাল শনিবার বিষয়টি জানিয়েছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলকে। দুপুরে সংবাদমাধ্যমকে এ নিয়ে বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে গেলেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক, ‘আপনারা নিশ্চয়ই জানেন আমাকে নিয়ে এমন প্রশ্ন ওঠে না। হ্যাঁ, মাঠের পারফরম্যান্স নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে পারেন। বলতে পারেন আমি ভালো খেলোয়াড় নই। তবে আমার শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে তিনি যে প্রশ্ন তুলেছেন কিংবা আমি খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করতে পারি না, টিম মিটিংয়ে কথা বলি নাÑ এসব কথা খুব খারাপ লেগেছে।’
একজন ফ্র্যাঞ্চাইজি স্বত্বাধিকারীর এমন মন্তব্যে মুশফিক এতটাই মর্মাহত, নিজের কথাও ঠিকমতো শেষ করতে পারেননি। ধরা গলায় বললেন, ‘মল্লিক ভাই (বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব) বলছেন, ওনারা ব্যাপারটা দেখবেন। আজ আমার সঙ্গে হয়েছে। কাল অন্যদের সঙ্গে যে হবে না, এ নিশ্চয়তা নেই। একজন খেলোয়াড় এতটুকু সম্মান আশা করতেই পারে। দেশকে এতদিন সেবা দিচ্ছি, এতটুকু সম্মান…।’ আবদুল আওয়ালের সঙ্গে এ বিষয়ে গতকাল মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবশ্য ফোন ধরেননি। তবে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেছেন, ‘পুরো ব্যাপারটা দেখেছি, শোভনীয় মনে হয়নি। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। জাতীয় দলের অধিনায়ক ও একজন খেলোয়াড়কে নিয়ে তিনি এভাবে বলতে পারেন না। তাকে ডাকা হয়েছে। আমরা কারণ দর্শানোর নোটিস দেব। যথাযথ উত্তর না পেলে ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। সেটা হতে পারে আর্থিক কিংবা অন্য কোনো শাস্তি।’
গত বিপিএল চলার সময়ই দলের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিতর্কিত হয়েছিলেন বরিশালের বুলসের শুভেচ্ছাদূত, সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবর। মুশফিক অবশ্য সংবাদ সম্মেলনে তাকে ‘পাগল’ বলেছিলেন। এবার বিতর্কিত মন্তব্য করলেন স্বয়ং ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিক। সম্পাদনা : মাকসুদা লিপি