আগে নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে সমাধান চায় সংলাপের আগে রোডম্যাপ প্রকাশকে ইতিবাচক মনে করছে না বিএনপি
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ ঘোষণা বিএনপি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে না। তারা মনে করছে, কমিশন একটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। আর সেটা হচ্ছে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। সেই কারণেই তারা সংলাপ শুরুর আগেই রোডম্যাপ ঘোষণা করছে। কমিশনের উচিত ছিল সংলাপ করার পর সকল রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে মতামত নেওয়ার পর রোডম্যাপ ঠিক করা। কারণ রাজনৈতিক দলগুলো কেমন নির্বাচন চাইছে ও কী কী চাইছে সেটা জেনে এরপর পরিকল্পনা করা। কিন্তু কমিশন সংলাপের আগেই আজ রোডম্যাপ ঘোষণা করছে। এর মানে হলো কমিশন সংলাপ করলেও তাদের মতোই কাজ করবে। এ কারণে বিএনপি মনে করছে, নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে। এই ইস্যুতে আলোচনা করে সমাধান বের করতে হবে। সংলাপ হতে হবে। সেটার কোনো উদ্যোগ নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, সরকার চায় কমিশন তাদের মতো করে কাজ করুক। নির্বাচন কমিশন সেদিকে এগোচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। কারণ এখনো পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার এমন কোনো ভূমিকা নেননি যাতে করে মনে হতে পারে তিনি নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করছেন। বরং তিনি তার মতো করেই কাজ করছেন।
বিএনপির আরও এক নেতা বলেন, যেখানে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সেখানে তারা আগেভাগেই দেড় বছরের পরিকল্পনা এখনই চূড়ান্ত করে ফেলছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার ব্যাপারেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিদর্লীয় সরকার গঠন করা। নির্বাচনকালীন সরকার গঠন নিয়ে এখন আলোচনা জরুরি। সেটা না করে কমিশনের রূপরেখা দেওয়া হচ্ছে। এই সব রোডম্যাপ অর্থহীন। এই কারণে কমিশনের রোডম্যাপের ব্যাপারেও বিএনপির বিশেষ কোনো আগ্রহ নেই।
এদিকে নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর পাঁচ মাস কাজ করেছে। আগামী দেড় বছরেরও কম সময়ের মধ্যে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন করার জন্য কমিশন নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সবসময় দাবি করেছেন, তিনি অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন করবেন। তিনি বলেছেন, আমরা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছি। আশা করি আমরা তা পারব। সবার মতামতও নেওয়া হচ্ছে। আগামীতেও হবে।
বিএনপি সিইসির ওপর আস্থা রাখতে পারছে না, আস্থা তৈরিতে কী করবেন এই ব্যাপারে তিনি বলেন, তারা আগেভাগেই যদি আস্থা হারিয়ে বসে থাকেন তাহলে হবে না। আস্থা রাখা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। আমরা সবকিছু ঠিক করেই সুষ্ঠু নির্বাচন করব।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচন করার উদ্যোগ নিচ্ছে। এর আগে ঠিক হতে হবে নির্বাচনকালীন সরকার কী হবে। আমরা নির্দলীয় সরকারের কথা বলছি। সেই নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি বড় সমস্যা। এই সমস্যার সমাধান হলে নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত যে সমস্যা হযেছে সেটা নিয়েও আলোচনা হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই ধরনের উদ্যোগ তো লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। উল্টো আবারও ৫ জানুয়ারির মতো একটি নির্বাচন করার সব পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু সেই উদ্দেশ্য সফল হতে দেওয়া হবে না। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী