জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ তফসিল ঘোষণার আগে সরকারি কাজে হস্তক্ষেপের এখতিয়ার নেই : সিইসি
সাইদ রিপন : রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের দায়িত্ব ইসির একার নয়। এছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল মিটিং মিছিল করতে পারবে কিনা সেটার দায়িত্ব কমিশনের না। তাছাড়া তফসিল ঘোষণার আগে সরকারি কোনো কাজের হস্তক্ষেপের এখতিয়ারও ইসির নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা।
গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম ও শাহাদত হোসেন চৌধুরী, কবিতা খানম ও অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রোডম্যাপ প্রকাশকালে সিইসি নুরুল হুদা বলেন, এটি একটি সূচনা দলিল। নির্বাচনের পথে কাজের জন্য এ কর্মপরিকল্পনাই সব নয়। সংযোজন-পরিমার্জন করে সবার মতামত নিয়ে আমরা কাজ করে যাবো। কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হলেও তফসিল ঘোষণার পর থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসির অধীনে প্রশাসনিকসহ সব ধরনের কাজের তদারকি শুরু হবে।
সিইসি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে করতে হবে। ফলে নির্বাচনের জন্য দু’বছরেরও কম সময় হাতে আছে। এই নির্বাচনের জন্য আমরা সাতটি করণীয় দিক শনাক্ত করে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সময়ে সংসদ নির্বাচন করতে দৃঢ়তার সঙ্গে ও সুচিন্তিত পন্থায় এগিয়ে যাচ্ছে। দেশবাসী একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছেন। সার্বিকভাবে দেশে জাতীয় নির্বাচনের একটি অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে নূরুল হুদা বলেন, শুধু সরকার কেন, রাজনৈতিক দল বা যে কোনো দেশি-বিদেশি সংস্থার প্রভাবমুক্ত নির্বাচন করতে পারব আমরা।
তিনি জানান, তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত কর্মপরিকল্পনার সাতটি বিষয় ধরে তারা কাজ এগিয়ে নেবেন। তফসিল ঘোষণার পর ইসির কাজে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা এলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্প্রতি একজন রাজনৈতিক দলের নেতার বাসায় ‘সামাজিক অনুষ্ঠানে’ পুলিশের বাধার বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে এলে এ ধরনের ঘটনায় ইসির পদক্ষেপ কী হবে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে সিইসি বলেন, এটা সরকারের বিষয়। আমরা তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনি পরিবেশ বজায় রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। এখন সরকারের কাছে কোনো অনুরোধ থাকবে না। তবে তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতির প্রয়োজন হলে অনুরোধ করা হবে। নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচনে ভোট গ্রহণে ইভিএম ব্যবহারের দরজা বন্ধ হয়ে যায়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর সরকার সহযোগিতা করলে এর ব্যবহার সম্ভব।
সংবাদ সম্মেলনের স্বাগত বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত সব কাজ ‘প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রেখে’ করার চেষ্টা করেছেন তারা। আমরা পরিকল্পনা ধরেই এগোচ্ছি। সুষ্ঠু, সুন্দর, সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে চাই আমরা। সততা ও শক্তির স্বাক্ষর যেন আমরা রাখতে পারি, সেজন্য সবার সহযোগিতা চান তিনি। সম্পাদনা : হুমায়ুন কবির খোকন