লন্ডনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ বিমানবন্দরে আবেগাপ্লুত খালেদা জিয়া তারেককে জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে নেন
শাহানুজ্জামান টিটু : চিকিৎসা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে ৪২ দিনের সফরে লন্ডনে পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল রোববার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি লন্ডনের হিথ্রো বিমান বন্দরে অবতরণ করে। সেখানে তাকে স্বাগত জানান ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহ ধর্মিনী ডাক্তার জোবায়দা রহমান। প্রায় দুই বছর পরে লন্ডনে মা-ছেলের সাক্ষাতে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান উভয়েই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। খালেদা জিয়া জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে নেন তারেক রহমানকে। এ সময় আবেগপূর্ণ দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক এম কয়ছর আহমদের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী বিমান বন্দরে বিএনপি নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মামুন। এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন।
হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে বেগম খালেদা জিয়া পাশ্ববর্তী হিলটন হোটেলে নেতাকমীর্দের সাথে সংক্ষিপ্ত কুশল বিনিময় করেন। এরপর স্থানীয় সময় সকাল ৮.৩০ টায় বড় ছেলে তারেক রহমানের গাড়ীতে করে তার পশ্চিম লন্ডনের বাসভবনে চলে যান। এ সময় রাস্তার দুপাশে দলের নেতাকর্মীরা নানা ধরনের সেøাগান দেন। খালেদা জিয়া গাড়িতে বসে হাত নেড়ে তাদের জবাব দেন। লন্ডনে অবস্থানকালীন সময়টা তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় অবস্থান করবেন খালেদা জিয়া।
সফরে থাকাকালীন যুক্তরাজ্য বিএনপি, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি। এছাড়া বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে দু-একটি বৈঠকের সম্ভাবনাও রয়েছে তার।
ঢাকা থেকে লন্ডনে যাওয়ার পথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে তিনি যাত্রাবিরতি করেন। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে দুবাই বিমান বন্দরের টার্মিনাল-৩ এ অবতরণ করেন তিনি। এ সময় তার যাত্রাবিরতির খবর জেনে সংযুক্ত আরব আমিরাত বিএনপির নেতারা বিমানবন্দরে উপস্থিত হন।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, চিকিৎসার উদ্দেশ্য হলেও বিএনপি চেয়ারপারসন ও তার ছেলে তারেক রহমানের মধ্যে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে শলাপরামর্শ হবে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে কিভাবে সক্রিয় করা যায় তা স্বাভাবিকভাবেই বিএনপির এ শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হবে বলে মনে করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। রাজনৈতিক অঙ্গনেও তাদের এ আলোচনা নিয়ে রয়েছে বিশেষ আগ্রহ। সূত্র জানায়, সফরে বিএনপি চেয়ারপারসন তার বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার, আগামী নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী, দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃত্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করবেন তিনি।
২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য গিয়ে খালেদা জিয়া প্রায় ২ মাস ছিলেন। সেখানে তার বড় ছেলে তারেক রহমান, স্ত্রী ডা.জোবাইদা রহমান, তারেকের মেয়ে জাইমা রহমান ছাড়াও ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমানও আছেন। সম্পাদনা : হুমায়ুন কবির খোকন