নূসরাত জাহান : বিবিসি কর্তৃপক্ষ তাদের নারী কর্মীদের বেতন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার করছে। ব্রিটিশ এ সংবাদ মাধ্যমের বর্তমান ও সাবেক অনেক সাংবাদিক এ কথা জানিয়েছে। তারা জানান, বিবিসির তারকা পুরুষ সাংবাদিকরা নারী সাংবাদিকদের চেয়ে ‘বেশি বেতন’ পায়। এটা বিবিসি ও পুরুষ সাংবাদিকরা প্রচার করে। তবে নারী সাংবাদিকদের দাবি, যতটা বলা হয় তারা সেই পরিমাণ বেতন পান না। তাদের বেতনের পরিমাণ অতিরঞ্জিত করে প্রচার করা হচ্ছে। বিবিসি নারী কর্মীদের বেতন নিয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছে মানুষকে। নারী কর্মীদের ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের ধনী কর্মীদের তালিকাভুক্ত করে প্রকাশ করেছে। এজন্য বিবিসির নারী কর্মীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
বিবিসির এক নারী সাংবাদিকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আত্মীয় বলেন, একজন পুরুষের চেয়ে একজন নারী কতটা কম বেতন পায় এটা ধারণাও করতে পারবেন না। কিন্তু তারা যে তথ্য প্রচার করছে তা খুবই বিরক্তিকর। বেতনের পরিমাণ শোনার পর বুঝতে পেরেছিলাম যা প্রচার করা হচ্ছে তা কতটা ভুল।
গত বছর বিবিসির আয়ের তালিকার শীর্ষে ছিলেন ক্রিস ইভানস। তার আয় দেখানো হয়েছিল সাড়ে ২২ লাখ পাউন্ড। এরপরই ছিলেন গ্রে লিনকার। তার আয় দেখানো হয়েছিল ১৭ লাখ ৯০ হাজার পাউন্ড। তৃতীয় সর্বোচ্চ বেতনের কর্মী ছিলেন গ্রাহাম নর্টন। তার বেতন দেখানো হয় ৮ লাখ ৯৯ হাজার পাউন্ড।
বৃহস্পতিবার ইভানস বিবিসির চাকরিতে ইস্তফা দেন। তার কাছে বেতনের যে হিসাব দেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ী তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর থেকেও ১৫ গুণ বেশি বেতন পান। তিনি বলেন, ‘এটা কি সত্য বলে আপনার মনে হয়? এটা বিবিসির একটা কৌশল মাত্র। নিজেদের সম্পর্কে ভালো ইমেজ তৈরি করতেই তারা এ কাজ করছে। তারা ভুল তথ্য প্রচার করছে।’
স্ট্রিকলেস ক্লাউদিয়া উইনকেলম্যান সবেচেয় বেশি বেতন পাওয়া নারী কর্মী। কিন্তু প্রতিবছর তিনি বাড়িতে ১৭ লাখ পাউন্ডের কম নিয়ে যেতে পারে। কোনো নারীর বাৎসরিক আয় ৫ লাখ পাউন্ডের বেশি নয় বলে তিনি জানিয়েছেন।
ওমেন’র আওয়ারের উপস্থাপিকা জেন গারভে বলেন, বিবিসিতে পুরুষরাই বেশি বেতন পায়। নারীরা এখানে বৈষম্যের শিকার। এখানে তারকা নারী সাংবাদিকদের অবস্থাও একই রকম।
বিবিসির সব বিভাগেই নারী-পুরুষের বেতন বৈষম্য রয়েছে। বিবিসির স্পোটর্সের ক্লেয়ার ব্লাডিং বাৎসরিক বেতন ১৯ লাখ ৯০ হাজার পাউন্ড। অ্যালান শেয়ারের বেতন ৫ লাখ পাউন্ড। আর জন ইনভারডেলের বাৎসরিক বেতন ২ লাখ ৪৯ হাজার পাউন্ড।
বেতন বৈষম্যে ও ভুল তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে বিবিসির নারী কর্মীরা হ্যাশট্যাগ, নুটনদ্যলিস্ট ও জেন্ডারডেগ্যাপ শীর্ষক প্রচার চালাচ্ছে। এর আগে বিবিসিতে নারী কর্মীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। এবার বেতন সম্পর্কে ভুল তথ্য প্রচারের অভিযোগ। সূত্র: ডেইলি মেইল।