কিরণ সেখ : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা এবং এ ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক বিধানসহ সকল কালাকানুন বাতিলের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ দাবি জানান।
৫৭ ধারা দিয়ে সরকার সাংবাদিকদের নির্যাতন করছে বলে অভিযোগ করে রহুল কবির রিজভী বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা দেয়া হয়েছে। আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা স্বাধীন মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অন্তরায়। বর্তমানে ৫৭ ধারার ভয়াবহতা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
৫৭ ধারা প্রত্যাহার করা হবে- আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী পরে তার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।
৫৭ ধারা থেকে আরও ভয়াবহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করতে যাচ্ছে সরকার- গণমাধ্যমের এ প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এই আইনের ১৯ ধারাতে গণমাধ্যমকে আরও শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণের বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনের খসড়ার ১৯ ধারায় বিদ্যমান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার সব বিষয় বিদ্যমান রয়েছে। এই ১৯ ধারাতেও তথাকথিত মানহানি, সামাজিকভাবে অপদস্থ করার চেষ্টা বিশেষভাবে রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের খসড়ার ১৫ (৫) ধারা চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য আরেকটি বড় বাধা হবে বলে মনে করেন তিনি।
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে কোনো বক্তব্য সরকারি ভাষ্যের বিপরীত হলে তা ‘ডিজিটাল সন্ত্রাসী অপরাধ’ হিসেবে গণ্য হবে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের মনগড়া ইতিহাসের বিরুদ্ধে কথা বললেই মামলা, জেল ও জুলুম আর নির্যাতনের খড়গ নেমে আসবে। সরকারের এসব কালাকানুন ও নীতিমালা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম, তাদের সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল মিডিয়া তথা ওয়েবসাইট, অনলাইন সামাজিক মাধ্যমের সরাসরি হস্তক্ষেপ। সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় যত মামলা আছে তা প্রত্যাহার এবং গ্রেফতারকৃত সাংবাদিকদের মুক্তির দাবি জানান তিনি।
বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, সিইসি জনগণের নিকট এমনিতেই পূর্ব থেকেই একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। এছাড়া সম্প্রতি সিইসির বিভিন্ন বক্তব্যে এটি আরো সুস্পষ্ট হয়েছে। সিইসি হিসেবে যোগদানের পর তিনি বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠতে পারেননি। নির্বাচন কমিশনে পদোন্নতি ও রদবদলে সিইসি একক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে নির্বাচনি আইন বহির্ভূত।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের এক ঘনিষ্ঠ আমলাকে ভারপ্রাপ্ত সচিব নিয়োগ দিয়েছে সরকার। সুতরাং ইসি ও সরকারের যৌথ প্রজোযনায় একতরফা ও নীলনকসার নির্বাচনের দিকে ধীরে ধীরে এগুচ্ছে এটি স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ