ওলামায়ে কেরামের সম্মান ও মর্যাদা
া আবু তালহা তারীফ
পবিত্র কোরআন-সুন্নাহ, শরীয়তের বিধি-বিধান নিয়ে লেগে থাকা বা এর সস্পর্শে থাকার কারনে ওলামায়ে কেরামকে সমাজ, ব্যক্তি, জনগন,রাষ্ট্র সবাই তাদেরকে শ্রদ্ধা, সম্মান করে থাকে। মহান আল্লাহ দেওয়া জীবন বিধান, ইসলামের প্রচার-প্রসার এবং কোরআন হাদিস চর্চা, হজরত আদম (আঃ) থেকে নবী রাসুল পর্যন্ত, পরবর্তীতে সাহাবায়ে কিরাম,তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন,আওলিয়া কেরাম এবং হক্কানী পীর মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরামের মাধ্যমে হয়ে আসছে। আমাদের এই উপমহাদেশের ইসলাম প্রচার প্রসারে হক্কানী পীর মাশায়েখের বিশেষ অবদান রয়েছে। ওলামায়ে কেরাম হচ্ছেন কুরআন-সুন্নাহর ধারক বাহক। উম্মতের কান্ডারী। তারা হচ্ছেন নবী গনের উত্তরসরী। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা:) বলেন,“ আলেমরাই হচ্ছেন নবীগনের উত্তরসুরী”। (তিরমিযী)
আলেমের পরিচয় কী ? হজরত হাসান বসরী (রাঃ) বলেন, আলেম বলা হয়,“ যে ব্যক্তি মহান আল্লাহকে না দেখে ভয় করে এবং আল্লাহ যা পছন্দ করেন তা সে পছন্দ করেন ও আল্লাহ যা অপছন্দ করেন তা সে বর্জন করে”। ওলামায়ে কেরাম হ”েছন একটি জাতির, একটি দেশের, বিশেষ মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তান। ওলামা কেরাম সম্মানের পাত্র।
তাদের ধনী লোক, প্রভাব শালী ও ক্ষমতাসীন ব্যক্তিসহ সকল শ্রেনির পেশার মানুষ সম্মান করে। ওলামায়ে কেরামদের মানুষ ভক্তির চোখে দেখে ও তাদের জন্য সকলে দোয়া করে। রাসুল (সাঃ) ওলামায়ে কেরামদের সম্পর্কে বলেন, “তোমাদের উপর আমার মর্যাদা যেমন, একজন ইবাদতকারীর উপর আলেমের মর্যাদা তেমন, তারপর রাসুল (সাঃ) বলেন, যারা জনগনকে দ্বীনি ইলম শেখায় তাদের জন্য আল্লাহ তার ফেরেশতাগন আসমান
ও জমিনের অধিবাসিগন এমনকি গর্তের পিপঁড়া ও মাছ পর্যন্ত কল্যান কামনা করতে থাকে”। (তিরমিযী)
ওলামায়ে কেরামের মর্যাদা মহান আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন। ওলামায়ে কেরামের মর্যাদা সম্পর্কে বলেন “যারা জানে এবং জারা জানে না, তারা কি এক সমান হতে পারে ?”। (সূরা যুমারা-৯)
ওলামায়ে কেরাম কোরআন হাদিস রিচার্চ করে সত্য মিথ্যা সম্পর্কে অবগত রাখে। জান্নাতের আরাম আয়েশের ও জাহান্নামের ভয়াভব কঠিন শাস্তি সম্পর্কে জ্ঞান রাখে বিধায় মহান আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে আলেমরাই তাকে ভয় করে। (সূরা ফাতির-২৮)
হক্কানী ওলামায়ে কেরাম ও পীর মাশায়েখদের মাধ্যমে দ্বীন ইসলাম এবং কুরআন হাদীসের চর্চা কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এমন এক সময় আসবে যখন হুক্কানী আলেমগন থাকবে না। সাধারন মুসলমান নিজের খেয়াল খুশিমত শরীয়াতের বিভিন্ন বিষয়ে ফাতওয়া দেওয়া শুর“ করবে। রাসুল (সাঃ) বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ ইলম বা জ্ঞানকে তার বান্দাদের মন থেকে টেনে হেচরে উঠিয়ে যাবেন না বরং আলেমদেরকে দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে ইলমকে উঠিয়ে নিবেন। এরপর মুর্খ ও জাহেল লোকদের নেতা বানাবে, তারপর তাদের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞেস করবে, তখন তারা বিনা ইলমেই ফাতওয়া দিবে। ফলে তারা নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে, অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে”। (বুখারী ও মুসলিম)
ওলামায়ে কিরামের মর্যাদার পাশাপাশি তাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে দ্বীন ইসলামের প্রচার ও প্রসারে একজন আলেমের মুখ্য ভূমিকা থাকা উচিত। ইসলাম প্রচার ও প্রসার আমাদের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) সহ সকল নবী রাসুল করে গেছে।
তাই নবী রাসুলদের উত্তরসুরী হিসেবে ওলামায়ে কিরামদের দাওয়াতী কাজ করতে হবে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরাই উত্তম জাতি, তোমাদেরকে বের করা হয়েছে মানুষদেরকে সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার জন্য”। (সূরা আল ইমরান-১১০) মানুষকে ইসলামের পথে আহবান ও সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ প্রদান করা অবশ্যই জররী। আর এই কাজ করতে হবে হেকমত ও ভাল উপদেশের মাধ্যমে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তুমি তোমার প্রভুর পথে মানুষকে হেকমত ও উত্তম উপদেশের মাধ্যমে ডাকো”। (সূরা নাহল- ১২৫)