শ্লোগান ছিল, ইয়া আল্লা ইয়া রাসুল নেওয়াজ শরীফ বেকসুর পাকিস্তানের কোর্ট তখন রায় দিয়েছে নেওয়াজ দুর্নীতিবাজ
বিশ্বজিৎ দত্ত : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরীফের সমর্থকরা যখন পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্টের সামনে শ্লোগান তুলছিল, ই্য়া আল্লা ইয়া রসুল নেওয়াজ শরীফ বেকসুর। ঠিক সেই সময়েই পাকিস্তানের সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আসিফ সঈদ খোসার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বিচারকম-লি এক বাক্যে রায় দিয়েছেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদে নেওয়াজ শরীফ থাকতে পারেন না। শুধু তাই নয়, সেইসঙ্গে আদালত কয়েকটি নির্দেশ দিয়েছে। যা হলো, নেওয়াজ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলা ন্যাশনাল একাউন্টিবিলিটি ব্যুরো তদন্ত করবে। শরীফ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আদালতে একটি মামলা দায়ের করতে হবে এবং ৬ সপ্তাহের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে। পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতের রায় পাবার পরেই নির্বাচন কমিশনও পাকিস্তানের সংসদে নোটিফিকেশন পাঠায়। সেখানে বলা হয়, জাতীয় সংসদে নওয়াজ ডিসকোয়ালিফাইড।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপি পনামা পেপার্স কেলেংকারি প্রকাশ পায়। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও বড় ব্যবসায়িদের দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থের তথ্য প্রকাশ করা হয়। সেখানে নেওয়াজের ও তার পরিবারের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল তাহরিকঈ ইসলামের প্রধান ইমরান খান নেওয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগটি কোর্টে নিয়ে যান। কোর্ট অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়। কমিটি তদন্ত শেষে জানায়, ২০১৩ সালে নির্বাচন কমিশনে দেয়া নেওয়াজের সম্পদের হিসাবের সঙ্গে বর্তমানে তার অর্জিত সম্পদের মিল নেই।
তার পরিবারের সদস্যদের জীবন যাপন ও সম্পদ অর্জনের বিষয়টিও সন্দেহজনক। যদিও নেওয়াজ এই অভিযোগ সব সময়েই অস্বীকার করে আসছেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা সম্প্রতি বলেছেন, পাকিস্তানের বিচার ব্যবস্থা বাংলাদেশের চেয়েও শক্তিশালী। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যও সম্প্রতি একই কথা বলেছেন। পাকিস্তানের উচ্চ আদালতের এই রায় ও তার পরবর্তি নির্বাচন কমিশন ও নেওয়াজের পদক্ষেপ প্রমান করে শুধু আদালতই নয় পাকিস্তানে নির্বাচন কমিশন ও রাজনীতিও শক্তিশালি। পানামা পেপার্স কেলেংকারিতে বাংলাদেশেরও প্রায় শতাধিক রাজনীতিবিদ,আমলা ও ব্যবসায়ীর নাম রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন ও রাজস্ব বোর্ড এসব বিষয়ে তদন্তের ঘোষণাও দিয়েছিল। কিন্তু এ নিয়ে আর কোনো উচ্চবাক্য নেই। মনে হয় হারিয়েই গেল। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কয়েকটি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত শতাধিকবার তিনি কোর্টে সময় নিয়েছেন, কিন্তু দেশের বিচার বিভাগ এ নিয়ে কোনো রায় দিতে এখনো পরেনি। আর নির্বাচন কমিশন নিয়ে এখনো কোনো আস্তার কাজ করতে পেরেছে কীনা সেটাও ভবিষ্যতে জানতে হবে। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি