বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন
খ্রিস্টীয় দর্পণ ডেষ্ক
১৭ জুলাই, ঢাকা ক্রেডিটের বি.কে.গুড.কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের ‘সুবর্ণ জয়ন্তীর শুভ উদ্বোধন ও লোগো উন্মোচন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি মি.নির্মল রোজারিও’র সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি মি.হিউবার্ট গমেজ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, দি খ্রিস্টান কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ ঢাকা -এর প্রেসিডেন্ট মি.বাবু মার্কুজ গমেজ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাহী সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং। এছাড়াও সভামঞ্চে আসন গ্রহণ করেন বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের উর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মি.জর্জ রোজারিও। অনুষ্ঠানের শুরুতে সংক্ষিপ্ত প্রার্থনা অনুষ্ঠান পরিচলানা করেন শ্রদ্ধেয় ফাদার ড.মিন্টু এল. পালমা। অতঃপর মহাসচিব হেমন্ত আই. কোড়াইয়ার আহব্বানে অ্যাসোসিয়েশনের প্রয়াত নেতাদের সম্মানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। মূল অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে ২০ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যেখানে বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সুদীর্ঘ ৫০ বৎসরের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, লক্ষ্য উদ্দেশ্য, ১০ দফা দাবী নামাসহ দীর্ঘ পথপরিক্রমায় গৃহীত ও বাস্তবায়িত গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচীসমূহের তথ্যচিত্র তুলে ধরা হয়।
বক্তব্য পর্বের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সভাপতি মিঃ নির্মল রোজারিও। অতঃপর পর্যায়ক্রমে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাহী সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, দি খ্রিস্টান কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ ঢাকা-এর প্রেসিডেন্ট মি.বাবু মার্কুজ গমেজ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, অন্যতম সভাপতি মি.হিউবার্ট গমেজ এবং প্রধান অতিথি ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসি।
প্রধান অতিথি কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ঢাকা মহাধর্মপ্রদশের আর্চবিশপ হিসেবে আমি বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের পৃষ্ঠপোষকের দায়িত্ব নিতে চাইনি। কিন্তু, যখন আমি ইউনাইটেড ফোরাম অব চার্চেস ইন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভেবেছি তখন মনে করেছি এই দায়িত্ব আমার নেয়া প্রয়োজন। সেই চিন্তা থেকে আমি বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের পৃষ্ঠপোষকের দায়িত্ব নিয়েছি। ফলে আমার কিছু দায়িত্ব এখানেও রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশেন এখন সমাজের জন্য একটি অপরিহার্য সংগঠন রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি কাছ থেকে দেখেছি তাদের কার্যক্রম, কতভাবে তাঁরা সমাজের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। আজকের এই দিনে আমি তাদের প্রশংসা করছি, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। একই সাথে বিগত ৫০ বৎসর এই সংগঠনের জন্য যারা কাজ করেছেন তাদেরকেও স্মরণ করছি, কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমাদেরকে আজ রাজনৈতিকভাবে সচেতন হতে হবে।
রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে, তবে খ্রিস্টিয় মূল্যবোধও বাজায় রাখতে হবে। নিজের পরিচয়কে হাঁরিয়ে ফেললেও চলবে না।সভাপতি মি.নির্মল রোজারিও, তাঁর বক্তব্যে ঐতিহাসিক এই শুভক্ষণে সকলকে স্বাগত ও শুভেচ্ছা জানান। তিনি প্রয়াত ও প্রাক্তন সকল নেতৃবৃন্দকে গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন এবং তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, আমরা গর্বিত আমাদের পূর্ব পুরুষদের কৃর্তিতে। তিনি বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বাইরে সকল খ্রিস্টান ভাই-বোনদের বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের পতাকা তলে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি সাবেক নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি বর্তমান নেতৃবৃন্দকেও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান বর্তমানে সংগঠনের এই অগ্রগতির জন্য। তিনি বলেন, বর্তমানে সারা বাংলাদেশব্যাপী ৭৫ টি শাখা সংগঠন ও ৬টি সহযোগী সংগঠন রয়েছে। দেশের বাইরে ৯ টি শাখা ও সহযোগি সংগঠন রয়েছে। এই অগ্রগতির অংশীদার আমরা সকলে। আমরা গর্ববোধ করি পূর্ব পুরুষদের প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনকে নিয়ে। তিনি বলেন, আমি আশা করি আগামী ১ বৎসর দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলা, অঞ্চল ও শাখা পর্যায়ে জয়ন্তী বর্ষ উদযাপিত হবে এবং সংগঠন আরও বেগবান ও শক্তিশালী হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের পূর্বে বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের ৫০ বৎসর পূর্তির লোগো উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি, সভপতি এবং বিশেষ অতিথিবৃন্দ। অতঃপর অনুষ্ঠিত হয় কেক কাটা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ বক্তব্য প্রদান করেন এসোসিয়েশনের উর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মি.জর্জ রোজারিও। এখানে উল্লেখ্য যে, ঘোষিত এই সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ ১৬ জুলাই ২০১৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষের মূল অনুষ্ঠান ঢাকায় অক্টোবর, ২০১৭ মাসে অনুষ্ঠিত হবে। সারা বৎসর দেশের বিভিন্ন জেলা, অঞ্চল ও শাখা পর্যায়ে জয়ন্তী বর্ষ উৎযাপিত হবে। (সৌজন্যঃ বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন)