রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
হাসান আরিফ : সরকার চলতি ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে সাড়ে ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় নির্ধারণ করেছে। এছাড়া সার্ভিস সেক্টর থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সর্বমোট রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেন। এসময় তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। সংশ্লিষ্টরা আন্তরিক হলে ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো সমস্যা হবে না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দেশের রপ্তানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে কিছু পণ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য, জাহাজ, ফার্নিচার রপ্তানিতে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এসব পণ্য রপ্তানিতে বিভিন্ন হারে নগদ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। গতবছর পণ্য ও কম্পিউটার সার্ভিস থেকে রপ্তানি আয় ছিল প্রায় ৩৪ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ১১ মাসে সার্ভিস সেক্টরে রপ্তানি আয় ছিল ৩ দশমিক ৩৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৫৪ ভাগ আসে ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন থেকে। গত বছর ইউরো ও পাউন্ডের অবমূল্যায়নের কারনে রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও রপ্তানি আয় আশানুরুপ হয়নি। এ বছর রপ্তানি সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে আশা করছেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গতবছর তৈরী পোশাক খাত মোট রপ্তানিতে ৮০ দশমিক ৮১ ভাগ, চামড়া খাত ৩ দশমিক ৫৪ ভাগ, পাট ও পাট পণ্য ২ দশমিক ৭৬ ভাগ, হোম টেক্সটাইল ২ দশমিক ২৯ ভাগ অবদান রখেছে। তৈরী পোশাক খাতে মাত্র দশমিক ২০ ভাগ প্রবৃদ্ধি ঘটলেও ইঞ্জিনিয়ারি প্রোডাক্ট খাতে ৩৫ দশমিক ০৫ ভাগ এবং প্লাস্টিক প্রোডাক্ট খাতে ৩১ দশমিক ৪ ভাগ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। অন্যান্য খাতের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) জুলাই মাসে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সমাপ্ত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর বিপরীতে আয় হয়েছিল ৩ হাজার ৪৮৩ কোটি ৫০ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার বা প্রায় ২ লাখ ৮২ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা। যা এর আগের ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের তুলনায় ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেশি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৩ হাজার ৪২৫ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতের পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২ হাজার ৮১৪ কোটি ৯৮ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। এই খাতের রপ্তানি আয় আগের অর্থবছরের তুলনায় শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে নিটওয়্যার খাতের পণ্য রপ্তানিতে ১ হাজার ৩৭৫ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং ওভেন গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানিতে ১ হাজার ৪৩৯ কোটি ২৫ লাখ ৯০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
এছাড়া বছরের ব্যবধানে হিমায়িত ও জীবিত মাছ রপ্তানি আয় ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় বাড়ার তালিকায় রয়েছে পাট ও পাটজাত দ্রব্য, হোম টেক্সটাইল পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, রাবার, প্লাস্টিক পণ্য, ক্যামিকেল পণ্য ইত্যাদি।