ছাত্র-শিক্ষকদের পরস্পরবিরোধী অবস্থান বেদনাদায়ক
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী উপাচার্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। বেদনাদায়ক। ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে যে ¯েœহ ও সম্মানের সম্পর্ক ছিল সেটা এখন আর আগের মতো নেই। শিক্ষকরা এখন বলপ্রয়োগ করতে অভ্যস্ত, ছাত্র-ছাত্রীরাও শিক্ষকদের সম্মান জানিয়ে আগের মতো আচরণ করে না। শিক্ষকরাও যেন ভুলে গেছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কিভাবে আচরণ করতে হবে। ছাত্র-শিক্ষকদের এই পরস্পরবিরোধী অবস্থান খুবই দুঃখজনক। এটা হওয়া উচিত নয়।
আমি একবার শিক্ষক সমিতির সদস্য ছিলাম। আশির দশকে অনেক আন্দোলন হয়েছে। তখন আমরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝখানে দাঁড়াতাম। আর শিক্ষক মানেই তো ছাত্র-ছাত্রীদের আশ্রয়ের একটা জায়গা। খুব মনে পড়ে, একবার এক ছাত্রদল নেতা পুলিশের তাড়া খেয়ে আমার অফিসে আশ্রয় নিয়েছিল। আমি তখন তাকে টেবিলের নিচে ঠেলে দিলাম। যাতে পুলিশ বুঝতে না পারে, এখানে কেউ আশ্রয় নিয়েছে। আমি আমার অফিসের দরজাটাও তখন খোলা রেখেছিলাম। দরজা বন্ধ রাখলে পুলিশ বুঝে ফেলত। আমি পুলিশকে বললাম, দেখুন, আপনাদের কাজ আপনারা করুন আর আমাকে আমার কাজ করতে দিন। আমি তখন পরীক্ষার খাতা দেখছিলাম। তখন বৃষ্টি ছিল। পুলিশ চলে গেলে তাকে একটা ছাতা দিলাম, যাতে বৃষ্টিতে না ভিজে। পরে অবশ্য ছেলেটা আমাকে ছাতাটা ফেরত দিয়েছিল। ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক থাকা উচিত। সেটা ছিলও। কিন্তু এখন সেই জায়গাটা নষ্ট হয়ে গেছে। মধুর সেই সম্পর্কটা পরস্পরের জায়গা থেকে মনে হয় আমরা নষ্ট করে ফেলেছি।
পরিচিতি : কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ
মতামত গ্রহণ : বায়েজিদ হোসাইন
সম্পাদনা: আশিক রহমান