জামায়াতকে জোটে রাখতে চায় বিএনপি সরকারও জোট থেকে বের করতে চায়
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী হিসেবে তার জোটে যাতে ভাঙন না ধরে সেই জন্য সতর্ক রয়েছেন। এই কারণে জোটের নেতাদের সঙ্গে সব সময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্ব দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে খালেদা জিয়াও প্রয়োজনে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।
জোটের দলগুলোর মধ্যে জামায়াত নিয়ে টেনশনে রয়েছে বিএনপি। কারণ জামায়াত নিয়ে নানা রকমের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কোনো কারণেই বিএনপি জামায়াত ছাড়বে না বলে সিদ্ধান্ত রয়েছে। এই কারণে বিএনপির নেতা ও কর্মীরা যাতে জামায়াত নিয়ে কোনো ধরনের বিরূপ মন্তব্য না করেন সেই বিষয়টিও খেয়াল রাখার জন্য বলেছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠ একজন বিএনপি নেতা বলেন, সরকার জামায়াত নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা করছে কিন্তু তা করলেও কোনো লাভ নেই। কারণ বিএনপি জামায়াতকে ছাড়বে না। নির্বাচনি জোটেই রাখবে। নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে হাইকোর্টের একটি রায়ে জামায়াতের ব্যাপারে আদেশ হয়। এরপর নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধন বাতিল করে তাদের প্রতীক বাতিল করে। তবে তাদের নিবন্ধন বাতিল করলেও তাদের নাম এখনো কমিশনের নিবন্ধিত তালিকার মধ্যে রয়েছে। ব্র্যাকেটের মধ্যে লিখে দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের আদেশের কথা।
এই ব্যাপারে আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত কি হয় সেই জন্য অপেক্ষা করছে বিএনপি ও জামায়াত। তারা শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে চাইছে।
সূত্র জানায়, আদালতে যে রায়ই হোক না কেন জামায়াত সেই জন্য অপেক্ষা করতে চান। জামায়াত ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করেছে। এই জন্য তারা খুব বেশি কিছু বলছেন না। তা না বললেও তারা তাদের ওয়েবসাইটে সব সময়ে আপডেট তথ্য দিচ্ছেন বিভিন্ন বিষয়ে।
বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতকে আশ্বস্ত করা হয়েছে আগামীতে সরকার কি সিদ্ধান্ত নেয় এবং সর্বোচ্চ আদালত কি রায় দিবে সেগুলো দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাদের অভিযোগ সরকার ২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে নানা কৌশলে বের করে সরকার নির্বাচনে নিতে চাইবে। এই জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের যে বিচার করার উদ্যোগ নিয়েছিল তা থেমে আছে। আবার নিবন্ধন বাতিলের বিষয়েও হাইকোর্টের রায়ের পর সর্বোচ্চ আদালতে কোনো কিছু সুরহা না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে।
এদিকে সূত্র জানায়, জামায়াত যাতে হতাশ না হয় ও নিরাশ না হয় এবং কেউ যাতে বিএনপি-জামায়াতের দূরত্ব তৈরি করতে না পারে সেই জন্য সতর্ক থাকতে হবে। আর নির্বাচনে অংশ নিলে জামায়াত প্রতীকে অংশ নিতে পারুক বা না পারুক আসন ভাগাভাগিতে কোনো সমস্যা হবে না।
সরকারের একজন নীতিনির্ধারক বলেন, বিএনপি জামায়াতকে সাথে রেখেও লাভ হবে না। কারণ তাদের নিবন্ধন আদালতে বাতিল হয়েছে। আর মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে বিচার হবে। এটা এখন সময়ের ব্যাপার। তারা আগামী নির্বাচনে নিজস্ব প্রতীকে ও স্বনামে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে না।