জলাবদ্ধতা ও যানজট : প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ ও পরিকল্পনা
আফসান চৌধুরী
নগরীর যানজট ও জলাবদ্ধতার দায় দুই মেয়র দিলেন ওয়াসাকে, ওয়াসার পক্ষ থেকে দোষারোপ করা হলো মেয়রদেরকে। আবার মেয়ররা দোষলেন অর্থবরাদ্দ ব্যবস্থাকে। অর্থবরাদ্দের কথা বলতে গিয়ে মেয়র দোষলেন যারা রাস্তায় বড় বড় ফ্লাইওভার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে। আমার মতে, এখানে সমন্বয়ের অভাব আছে। সমন্বিত পরিকল্পনা, পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সংকট থেকে উত্তরণ কঠিন হবে।
আমরা দেখি, গুলশান-বনানী এলাকার লোকজনকে বেশি কষ্ট করতে হয় না। কষ্ট তো সব সাধারণ মানুষের। তাহলে কি ব্যবস্থাটা এমন যে, ক্ষমতাবানদের অসুবিধা হবে না, সব অসুবিধা হবে অন্যদেরই?
আমাদের যে নির্বাচিত শাসন ব্যবস্থা আছে, যেটাকে আমরা বলি সরকারÑ তা কি জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে না? ঢাকা শহরে ৫টা সংস্থা একসঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি, একে অন্যের সঙ্গে সমন্বয় করতে পারে না? দোষটা তো এই পদে যারা যাবেন, তাদের হবে না, হবে এই ব্যবস্থার। আমাদের তো কিছু বলার নেই কষ্ট পাওয়া ছাড়া! ঢাকা শহরের লেক ভরাট করে থাকার ব্যবস্থা করে থাকতে দিচ্ছি। দশ হাজার মেয়র দিলেও তো এ সমস্যার সমাধান করা যাবে না।
ঢাকার মহানগরের এই সমস্যার সমাধান কিভাবে আমি জানি না। তবে আমার মনে হয়, এখানে পরিকল্পনাগুলো সমন্বিতভাবে নেওয়া হয় না। একজন পরিকল্পনা করে দুইজনকে দেখাতে দেখাতে আবার বৃষ্টি হয়ে যায়। তার ফলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। যানজটে নাকাল হয় মানুষ। আমার পরিষ্কার কথা হচ্ছে, যারা পরিকল্পনা করেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন না। ঢাকায় ৭০ ভাগ মানুষ হাঁটেন।
জলাবদ্ধতার কারণে সবচেয়ে বেশি অসুবিধার মধ্যে পড়েন তারাই, যারা পায়ে হাঁটেন। জলাবদ্ধতার শিকার সবচেয়ে কমন হন যারা গাড়িতে চলেন। আগে পানি জমলে দ্রুত চলে যেত। এখন তার ব্যতিক্রম হচ্ছে কেন? কারণ, পানি নিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা নেই। আমরা পানি নিষ্কাশনের পথগুলো বন্ধ করে দিচ্ছি। কেন পথগুলো বন্ধ হচ্ছে?
ঢাকা শহরে জমি হচ্ছে এক নম্বর ব্যবসা। জমির সন্ধানে মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে। জমি দখল করে নিচ্ছে এবং জমি দখল কারা করে? রিয়েল এ্যাস্টেট ব্যবসায়ীরা ধনী মানুষ। বড়লোক। বড় লোকদের এই শহরে গরীবদের তো কষ্ট বেশি হবেই!
পরিচিতি: সাংবাদিক
মতামত গ্রহণ: সাইফুল ইসলাম
সম্পাদনায়: আশিক রহমান ও মোহাম্মদ আবদল অদুদ