অধিকাংশ আলোচকের মতামত উপেক্ষিত কেন?
ওয়ালিউর রাহমান
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার প্রয়াসে নির্বাচন কমিশন সংলাপ শুরু করেছে। কমিশন প্রথমে দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। তাদের কাছে পরামর্শ চান। আলোচকরা প্রত্যেককেই তার নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করেছেন। আলোচনায় অনেক কথাই উঠে এসেছে। প্রত্যেক আলোচকের মূল কথা, আলোচনার মূল বিষয়ই ছিল নির্বাচন কিভাবে সুষ্ঠু করা যায়। এখানে ‘না’ ভোট সম্পর্কে যেমন কথা হয়েছে, কথা হয়েছে নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের ব্যাপার নিয়েও। আলোচক হিসেবে আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। নির্বাচন নিয়ে আমি আমার অভিমত দিয়েছি। বলেছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন তা সবিস্তারে। আমি বলেছি, নির্বাচনের সময় সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন নেই, কেন তার ব্যাখ্যাও দিয়েছি। একান্ত প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ব্যবহার করা যায় কিনা পরীক্ষ-নিরীক্ষা করে দেখার পরামর্শ দিয়েছি। সেনাবাহিনী স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক। আইন পরিবর্তন করে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে খধি ধহফ ঙৎফবৎ ঋড়ৎপব এর সাথে কাজ করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। তাছাড়া আমার জানামতে, সেনাবাহিনীও এটা পছন্দ করে না। একইভাবে মতপ্রকাশ করেছেন অনেক আলোচক। কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হলোÑ আমাদের গণমাধ্যম মাত্র কয়েকজনের মতামতকেই গুরুত্ব দিল! ৫-৬ জন আলোচক হয়তো নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের কথা বলেছেন, কিন্তু বাদবাকি সবাই তো সেনা মোতায়েনের বিষয়টি বলেননি। তাহলে প্রায় সব পত্রিকায়, ‘সুশীলরা আগামী নির্বাচনে সেনা মোতায়েন চায়’ শিরোনাম হয় কি করে? আমি আশ্চর্য্য হয়েছি বৈকি? দেশের সাধারণ মানুষ পত্রিকার সবটা পড়ে না। বেশিরভাগ শিরোনাম দেখে। এমন শিরোনামে তারা বিভ্রান্ত হবে।
এখন যে মৌলিক প্রশ্নটি সামনে এসেছে তা হলোÑ একটি বিরাট অংশের আলোচকের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে মাত্র কয়েকজনের অভিমতকে কেন এভাবে গুরুত্ব দেওয়া হলো? হাইলাইট করা হলো? কৌতূহলী পাঠক জানতে চায়। সচেতন মানুষ জানতে চায়। আশা করব, সমস্ত আলোচকের মতামতই যেন নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে আমলে নেয়। এছাড়া ‘না’ ভোট পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া বা সহায়ক সরকারের ব্যাপারেও কোনো ঐক্যমত্য হয়নি। আমরা অনেকে এব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছি।
পরিচিতি : নিরাপত্তা, আইনের শাসন, নির্বাচন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড টেরোরিজম