খালেদা জিয়াসহ ৩ জনের জামিন বাতিলের সিদ্ধান্ত ৭ আগস্ট
মামুন খান : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ৩ আসামির জামিন বাতিল হবে কিনা সেই সিদ্ধান্তের তারিখ আগামী ৭ আগস্ট ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারস্থ কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আকতারুজ্জামান এদিন ঠিক করেন। বৃহস্পতিবার মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আত্মপক্ষ শুনানি এবং অপর দুই আসামি সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যের জন্য দিন ধার্য ছিল। সকাল ১১টা ১০ মিনিটে মামলার কার্যক্রমের শুরুতে মামলার কার্যক্রম মূলতবি রাখার আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এর বিরোধিতা করে বলেন, খালেদা জিয়া জামিনের অপব্যবহার করে বিদেশে গিয়েছেন। এজন্য জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হোক। খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ শুনানি এবং অপর দুই আসামির জামিন বাতিল ও তাদের সাফাই সাক্ষ্য শেষ করে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করার আবেদনও করেন মোশাররফ হোসেন কাজল। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ আবেদন করা হয়।
আসামি শরফুদ্দিন আহমেদের আত্মপক্ষ শুনানির জন্য পুনরায় আবেদন করেন তার আইনজীবী রেজাউল করিম সরকার। একই সঙ্গে তিনি সাফাই সাক্ষ্যের জন্য সময়ের আবেদন করেন। কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষেও সময়ের আবেদন করা হয়। আদালত বেলা ১টার দিকে তাদের উভয়ের আবেদন নামঞ্জুর করে আধঘণ্টার মধ্যে সাফাই সাক্ষ্যের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন। বেলা দেড়টায় মামলার কার্যক্রম শুরু হলে আদালতকে অসহযোগিতা করায় দুই আসামির জামিন কেন বাতিল হবে না তা জানতে কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষে তার আইনজীবী মিজানুর রহমান এবং সরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে রেজাউল করিম সরকারকে আধা ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন বিচারক। একই সঙ্গে ওই সময়ের মধ্যে খালেদা জিয়ার জামিন কেন বাতিল হবে না তারও কারণ দর্শানোর জন্য তার আইনজীবীদের নির্দেশ দেওয়া হয়। বেলা ২টায় খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন কারণ দর্শান। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ৭২ বছরের বয়স্ক মানুষ। তার হাত ও পায়ে ব্যথা। এজন্য চিকিৎসার জন্য তিনি বিদেশে গেছেন। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তিনি চলে আসবেন। পরবর্তীতে তিনি আদালতে হাজির হবেন। বিষয়টি সহানুভূতির সাথে দেখে খালেদা জিয়ার জামিন অব্যাহত রাখার আবেদন করেন তিনি। কাজী সালিমুল হকের পক্ষে মিজানুর রহমান এবং সরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে রেজাউল করিম সরকার কারণ দর্শান ।
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও আদালতকে সহায়তা করছেন না। আর খালেদা জিয়া সেপ্টেম্বরের পরে আসবেন। ততদিন অপেক্ষা করতে হবে। আইনের চোখে সবাই সমান। এভাবে চলতে আর আত্মপক্ষ শুনানি শেষ করা যাবে না। এজন্য আদালতে উপস্থিত দুই আসামির জামিন বাতিল করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো এবং খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আত্মপক্ষ শুনানি শেষ করে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্যের জন্য বলেন তিনি। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আগামী ৭ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ ৩ জনের জামিন বাতিলের আদেশের জন্য দিন ঠিক করেন। একই আদালতে বিচারাধীন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখও ৭ আগস্ট ধার্য করেছেন আদালত। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ