কালাইয়ে স্কুলছাত্রীর প্রতিবাদে বন্ধ হল বাল্যবিয়ে
মতলুব হোসেন, জয়পুরহাট : সৎ মায়ের সংসার। বাবা-মা মিলে তাদের নাবালক মেয়ে তানিয়াকে বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করেন গত শুক্রবার রাতে। বিবাহের আনুষ্ঠানিকতা শুরু। রাতে বরযাত্রীর জন্য ভোজেরও আয়োজন করা হয়েছে। বরের উপস্থিতিতে-কনের সাথে বিবাহের ধর্মীয় আনুষ্ঠিকতা শুরু হওয়ার আধাঘণ্টা আগে প্রতিবাদী কন্ঠে বাবার মোবাইল কেড়ে নিয়ে তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অভিযোগ করে বলেন তাকে জোরপূর্বক বিবাহ দেওয়া হচ্ছে। কালাই মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম বকুল তাৎক্ষণিক বিষয়টি জানায় উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফাজ উদ্দিনকে। নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনা জানার পরপরই ওই প্রধান শিক্ষক, গণমাধ্যম কর্মী ও তার অফিসের লোকজনদের নিয়ে রাতেই উপস্থিত হন বিয়ে বাড়িতে। ততক্ষণে ওই বিবাহের আয়োজকরা টের পেয়ে আসর থেকে বরসহ পালিয়ে যায়। শুক্রবার রাতে কালাই পৌর শহরের বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তানিয়া কালাই মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা তোতা মিয়া। গ্রামের বাড়ি উপজেলার হাজিপারা। সংসারে সৎ মা। তানিয়াকে বাল্যবিয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে দু’জন মিলে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে নিয়ে তা বন্ধ করতে রাতেই শহরের একটি ভাড়া বাড়িতে উপস্থিত হন। সেখানে গিয়ে তানিয়ার নিকট থেকে সবকিছু শুনার পর ওই বিবাহের সকল আয়োজন বন্ধ করেন তারা। বর্তমানে তানিয়া নিরাপদ। তানিয়া বলেন, সৎ মায়ের সংসারে বাবার করার কিছুই নেই। তাই ওরা আমাকে বিবাহ দেওয়ার জন্য ওঠেপড়ে লেগেছে। আমি পড়াশুনা করতে চাই। প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, তানিয়া মেধাবী ছাত্রী। সে অনেক বড় হবে। সে অকালে ঝড়ে যাক এটা আমার প্রত্যাশা নয়। বিষয়ে ইউএনও আফাজ উদ্দিন বলেন, রাতে বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে তা বন্ধ করা হয়েছে।