বর্ষাকালের আকাশের রং, রূপ ও সৌন্দর্য
মো. আবদুল কুদ্দুস
আকাশ সুবিশাল। এই আকাশের উপর অলৌকিক গৃহে বাস করেন এর সৃষ্টিকর্তা নিজেই। সেজন্যই হয়তো আকাশের রহস্যের শেষ নেই। রহস্যের আঁধার আকাশ থেকেই মানুষের র”জি-রিজিকের ফয়সালা হয়। মানুষের জন্ম মৃত্যু, সম্মান-অপমানের হুকুম আহকাম জারি হয় এই আকাশ থেকেই। মানুষ তাদের সফলতার জন্য কৃতজ্ঞতা এবং ব্যর্থতার জন্য দায় ওই আকাশের দিকে চোখ তুলে জানান দেয়। এই বিশালাকৃতির আকাশই পৃথিবীর সকল অফিসিয়াল কাজের রাজধানী। পৃথিবীর সব সৌন্দর্যের আধার। তারপরও আকাশের তো কোনো হিংসা নেই। নেই কোনো অহংকার। মানুষ, প্রাণি, মাটি, পানি, বায়ু, গাছপালা, পশু-পাখি, নদী-নালা, শহর-গ্রাম সবকিছুকেই এই বিশাল আকাশ তার আঁচলে ঠাঁই দিয়েছে। ধারণ করেছে নষ্ট পচা অন্য সবকিছুকেও। কারও প্রতি তার সামান্য অবহেলা নেই। পৃথিবীর কোনো উপাদান তার প্রতি কোনো অভিযোগ করেনি কোনোদিনও। এই আকাশের নিচে যারা বাস করে তাদের মধ্যে কে সাম্প্রদায়িক আর কে অসাম্প্রদায়িক তা ভাবার সময় বা ইচ্ছে এই বিশাল আকাশের নেই। উদারতাই তার নিকট মুখ্য বিষয়।
ঝিঁকিমিকি তারার মেলা কিংবা ভাসমান কালো-শুভ্র মেঘমেলা এর সৌন্দর্যের ওপর বিন্দুমাত্র কালিমা লেপন করতে পারে না। প্রতিটি রূপেই তার এক একটি গুণ প্রকাশিত হয়। সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা আর রাত সব অবস্থায় তার রূপের ভিন্নমাত্রিকা দেখা যায়। বঙ্গোপসাগর হতে এই নীল আকাশে ভেসে আসে মেঘ। মেঘপুঞ্জের সেই ভাসমান আকৃতির কারণে সৃষ্ট শীতল হাওয়ায় মানুষের প্রাণ জুড়িয়ে যায়। মেঘের আগমনকে স্বাগত জানিয়ে পাহাড়, পর্বত এবং গাছপালা মাথা নেড়ে তাদের অভিবাদন জানায়। মেঘমালারা তাতে খুশি হয়। সেই খুশিতে মুগ্ধ হয়ে প্রশান্তির বৃষ্টি ঝরিয়ে প্রকৃতিকে ভিজিয়ে দেয়। এই বৃষ্টিতে মৃতপ্রায় শুকনো পৃথিবীর মাটি সতেজ হয়ে ওঠে। জমিনে ফলে সোনালী ফসল। গাছে গাছে ফুটে রং-বেরঙের ফুল। নদী-নালা পানিতে ভরে যায়। পৃথিবীর সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়।
প্রকৃতির সেই অকৃপণ সৌন্দর্যে আমাদের সৃষ্টি। সেই সৌন্দর্য আমরা ভালোবাসি। তাই আসুন আকাশের সেই রূপে গুণে মুগ্ধ হয়ে আমরা অন্য মানুষ ও প্রাণীর প্রতিদ্বন্দ্বি না হয়ে, কারও প্রতি বিদ্বেষ পোষণ না করে আপন মহিমায় পৃথিবীর সেবা করি। গড়ে তুলি আলোকময় পৃথিবী। বাংলাদেশ হোক সেই শান্তিময় পৃথিবীর একজন সঙ্গী।
লেখক: শিক্ষক, বিজনেস স্টাডিজ বিভাগ ও সহকারী প্রক্টর, নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, রাজশাহী
ংযুধসড়ষঁরঃং@মসধরষ.পড়স
সম্পাদনা: আশিক রহমান